Friday, March 29, 2024
More
    HomeCampus Newsটেক্সটাইল ইন্জিনিয়ার - যেন মেলায় হারিয়ে যাওয়া ভাইকে উদ্ধারে নিয়োজিত হওয়া

    টেক্সটাইল ইন্জিনিয়ার – যেন মেলায় হারিয়ে যাওয়া ভাইকে উদ্ধারে নিয়োজিত হওয়া

    টেক্সটাইল ইন্জিনিয়ার – যেন মেলায় হারিয়ে যাওয়া ভাইকে উদ্ধারে নিয়োজিত হওয়া…….. আমরা বহুমুখী স্বপ্নে ঘেরা মানুষ। একাধিক স্বপ্ন থাকে আমাদের রঙিন মস্তিস্কে। বাড়ি থেকে মা বলছে ডাক্তার হও, বাবা ইন্জিনিয়ার, খালা-ফুফু চায় বিসিএস দেই আর পাড়াপড়শি তো হাজারো স্বপ্ন আমাদের নিয়ে। আবার অনেকে নিন্দাও করে।

    এই যেমন ধরুন ,আপনি গ্রাজুয়েট কমপ্লিট করে বেকার। তখন চারপাশ থেকে শব্দ দূষন হবে- ছেলেটা আর পারলো কই? ইন্জিনিয়ার হয়েও বেকার, বিসিএস বিসিএস করে জীবনটাই শেষ জরে দিলো, আরো কত কি …. সত্যিই তো, আমাদের নিন্ম মধ্যম আয়ের দেশ থেকে আমরা চাইলেও এরচেয়ে বেশি কি আশা করতে পারি?? তাই বলে কি আশা ছেড়ে দিয়ে হাত-পা গুটিয়ে চাতক পাখির মতো আকাশ পানে হা করে তাকিয়ে থাকবেন বৃষ্টির ফোঁটার আশায়? যদি ঘুম থেকে উঠেই শুনতে পান গ্রাজুয়েট শেষ করার আগেই আপনার চাকরির ব্যাবস্থা হয়ে গেছে তখন বিষয়টা কেমন ঠেকবে আপনার কাছে? হ্যা, মনে হতে পারে কাল্পনিক,কিন্তু সত্য এবং সেটা বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট থেকেই।

    মূলকথায় আসা যাক, দেশে বহু ইন্জিনিয়ার বেকার থাকলেও কতজন টেক্সটাইল ইন্জিনিয়ার বেকার আছে সেটা খুজে বের করতে পায়ের জুতো ছিড়ে যাবে কিন্তু বের করা মুশকিল হবে।অথচ এখবর কজনইবা রাখে? ক’জনইবা জানে এদেশের টেক্সটাইল খাতের রপ্তানির পরিমান অন্য যেকোনো জিনিসের চেয়ে ঢের এগিয়ে? ক’জনইবা জানে এখনো পর্যাপ্ত পরিমান দক্ষ টেক্সটাইল ইন্জিনিয়ার খড়ায় ভুগছে বাংলাদেশ? তাইতো প্রতিবছর শুধুমাত্র টেক্সটাইল ইন্জিনিয়ার বাবদ এদেশ থেকে চলে যাচ্ছে ১০ হাজার কোটি মার্কিন ডলার? তবে কি প্রয়োজন নেই আমাদের দক্ষ টেক্সটাইল ইন্জিনিয়ারের? প্রশ্ন কিন্তু থেকেই যায়….. এবার আসা যাক কেন টেক্সটাইল ইন্জিনিয়ার হবো? টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ের শিক্ষার্থীদের বাংলাদেশে রয়েছে চাকরির বড় বাজার। সরকারের বিভিন্ন টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিতে কাজের সুযোগের পাশাপাশি বেসরকারি পর্যায়ে স্থাপিত দেশী-বিদেশী টেক্সটাইল মিল, বিভিন্ন বায়িং অফিস, বুটিক হাউস, ফ্যাশন হাউস, গার্মেন্ট শিল্পে ও টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিতে বড় বড় পজিশনে কাজের অবারিত সুযোগ রয়েছে।

    মূলত টেক্সটাইল বিষয়ে শিক্ষার্থীদের যে কোনো ছোট-বড় টেক্সটাইল বা গার্মেন্ট ইন্ডাস্ট্রির পণ্য উৎপাদন কার্যক্রমের প্রাণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এছাড়া বিভিন্ন কম্পোজিট শিল্প, স্পিনিং, উইভিংসহ গার্মেন্ট প্রতিষ্ঠানেও তারা কাজ করে থাকেন। সেই সঙ্গে বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ব ও বেসরকারি ব্যাংক এবং শিল্পঋণ প্রদানকারী সংস্থাগুলোর শিল্পঋণ বিতরণ সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে চাকরির সুযোগ রয়েছে। ফলে শুধু দেশের অভ্যন্তরেই তাদের জন্য রয়েছে বিশাল কাজের ক্ষেত্র। এক্ষেত্রে যারা গ্রাজুয়েট কমপ্লিট করে দেশে থাকার ইচ্ছা রয়েছে তাদের জন্য এটা সুবর্ন সুযোগ। কেন টেক্সটাইল ইন্জিনিয়ারদেরকে বলা হচ্ছে -মেলায় হারিয়ে যাওয়া ভাইকে উদ্ধারের কাজে নিয়োজিত আছে? একসময়ে বাংলাদেশের “সোনালি আঁশ “হিসাবে বিবেচিত ছিলো পাট। আজও পাটের বহুমুখী ব্যাবহার রয়েছে তবে পাট চাষের সেই ঐতিহ্যতা নেই, নেই সেই খাল-বিলে ভিজিয়ে রাখা পাটগাছের ঐতিহ্যবাহী গন্ধ।দেশের পুরাতন অনেক জুট মিলসই বন্ধ। তাই চাইলেও পাটের রেশ ফিরিয়ে আনার সুযোগ নেই। তবে আমরা এখনো গ্রামে-গঞ্জে দেখতে পাই শিমুল তুলার ছিটফোটা।

    যেহেতু বর্তমান বাংলাদেশের বানিজ্যভিত্তিক প্রতিষ্ঠানগুলোর নজর টেক্সটাইল খাতে সুতরাং চোঁখ বন্ধ করে টেক্সটাইল শিল্পের উপর ভরসা করা যায়। সেই সাথে পর্যাপ্ত পরিমান তুলার চাষ না হলে বিভিন্ন প্রক্রিয়াজাতকরনের মাধ্যমে প্রস্তুতকৃত ফাইবার দ্বারা টেক্সটাইল খাতের অগ্রগতি লক্ষনীয়। আর পাটের সেই সোনালি ঐতিহ্যকেই এখানে রূপক অর্থে মেলায় হারিয়ে যাওয়া ভাইয়ের সাথে তুলনা করা হয়েছে যা প্রক্রিয়াধীন দেশের টেক্সটাইল শিল্পকে বুঝায়। এবার বুঝা গেল?

    টেক্সটাইলে পড়াশোনার সুযোগ কিরকম? সরকারি বহু বিশ্ববিদ্যালয়ে এ বিষয়ে পড়ার সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব টেক্সটাইল (বুটেক্স), জাতীয় বস্ত্র প্রকৌশল ও গবেষনা ইন্সটিটিউট (নিটার)-সাভার, ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (ডুয়েট), মওলানা ভাষানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট), খুলনা বুটেক্সের অধীনে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে এ বিষয়টি পড়ানো হয় যেমন- বেগমগঞ্জ টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, নোয়াখালী; পাবনা টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ ইত্যাদি। এছাড়াও বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪ বছর মেয়াদি বিএসসি কোর্সে গ্রাজুয়েট সমাপ্ত করার সুযোগ রয়েছে।

    তাহলে স্বপ্ন কি নাড়া দিচ্ছে? হওয়া যাবে টেক্সটাইল ইন্জিনিয়ার? দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার অঙ্গিকার তো করা যাবে ?

    Author : Khaladur Rahman Siam

    RELATED ARTICLES

    LEAVE A REPLY

    Please enter your comment!
    Please enter your name here

    - Advertisment -

    Most Popular

    Recent Comments