Saturday, November 2, 2024
Magazine
More
    HomeTechnical Textileতুলি-ক্যানভাসের অনবদ্য সৃষ্টিতে টেক্সটাইল

    তুলি-ক্যানভাসের অনবদ্য সৃষ্টিতে টেক্সটাইল

    সভ্যতার আদি লগ্ন থেকে টেক্সটাইল মানবজীবনের সাথে ওতোপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে।সময়ের সাথে সাথে সবকিছুর পরিবর্তন ঘটলেও মানবজীবনে টেক্সটাইলের ব্যবহার মোটেও কমেনি বরং দিন দিন বেড়েই চলেছে। চিত্রশিল্পের সাথেও রয়েছে টেক্সটাইলের ব্যাপক মিলবন্ধন। চিত্রশিল্পের জন্য ব্যবহৃত সরঞ্জামে(পেইন্টিং ব্রাশ, ক্যানভাস) টেক্সটাইলের ভূমিকা অনবদ্য।


    ★★পেইন্টিং ব্রাশঃ
    পেইন্টিং ব্রাশ তৈরিতে যে ফিলামেন্ট ব্যবহৃত হয় তা প্রায়শই ‘bristles’ নামে পরিচিত। প্রাকৃতিক bristles এবং সিন্থেটিক bristles এই দুই ধরনের bristles পেইন্টব্রাশ তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। প্রাকৃতিক bristles শূকর বা badger এর মতো প্রাণীর লোম থেকে তৈরি হয়। সিন্থেটিক bristles প্রায়শই নাইলন,পলিয়েস্টার বা উভয়ের সংমিশ্রণ থেকে তৈরি করা হয়। প্রাকৃতিক bristles সিন্থেটিক bristles এর তুলনায় soft হয়।

    ছবি আঁকার জন্য ব্যবহৃত ব্রাশঃ

    round, flat, bright, filbert, fan, angle, mop, rigger

    যেসব প্রাণীর লোম বা পশম থেকে পেইন্টব্রাশ তৈরি হয়ঃ

    ১.কাঠবিড়ালির লোমঃ
    কাঠবিড়ালির লোম ব্যতিক্রমীসহ অত্যন্ত সূক্ষ, নরম, একইসাথে শোষণকারী। এই লোম থেকে তৈরি পেইন্টব্রাশ বিশেষ গুণাবলীসম্পন্ন হওয়ায় এটি জলরঙের জন্য মসৃণ ফিনিশিং দেয়। চার ধরনের কাঠবিড়ালি রয়েছে যাদের লোম প্রধানত পেইন্টব্রাশ তৈরির জন্য ব্যবহৃত হয়।
    √Kazan squirrel
    √Blue squirrel
    √ Taleutky squirrel
    √Canadian or Golden sqirrel
    ২.Badger Hair:
    এই প্রাণীর লোম সূক্ষ সাদা এবং কালো বৈচিত্র্যময়, যা সাধারণত শুধু পেইন্টব্রাশের জন্যই ব্যবহৃত হয়না,এটি blending ব্রাশ হিসেবেও দুর্দান্ত।
    ৩.নেউলের লোমঃ
    এশিয়া,আফ্রিকা এবং ইউরোপ জুড়ে চল্লিশেরও বেশি প্রজাতির নেউল রয়েছে। এটি চেহারায় অনেকটা badger এর মতোই। নেউলের লোম দিয়ে তৈরি এই ব্রাশগুলো মূলত তেলরঙের জন্য ব্যবহৃত হয়।
    ৩.অশ্বকেশরঃ
    অশ্বকেশর সাধারণত শক্ত, সামান্য মোটা, স্থিতিস্থাপক এবং দীর্ঘ। এটি মূলত জাপানি পেইন্টব্রাশ তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। ক্যালিগ্রাফি ব্রাশগুলির জন্য এটি বিশেষত জনপ্রিয়। তবে উন্নতমানের কেশরগুলো বেশিরভাগ জলরঙের ব্রাশগুলোতে ব্যবহৃত হয়, লম্বা এবং মোটা কেশরগুলো ক্যালিগ্রাফি ব্রাশগুলোতে ব্যবহৃত হয়।
    ৪.Kolinsky Sable Hair:
    Kolinsky sable থেকে তৈরি ব্রাশ হলো সূক্ষ শিল্পীদের পেইন্টব্রাশ।এই প্রাণীর লেজের লোম দিয়ে পেইন্টব্রাশ তৈরি করা হয়, যা red sable বা sable হেয়ার ব্রাশ নামেও পরিচিত। Kolinsky sables সাধারণত জলরঙের ব্রাশগুলোতে ব্যবহৃত হয়। এই লোমের এক পাউন্ড কয়েক হাজার ডলারে বিক্রি হয়।
    ৫.Ox Hair:
    এই প্রাণীর লোম ফ্ল্যাট ব্রাশগুলোতে বেশি ব্যবহৃত হয়,তবে রাউন্ড ব্রাশ গুলোতেও ব্যবহৃত হয়।এই ব্রাশগুলো অত্যন্ত নরম হয়।তেলরঙের জন্য এই ব্রাশ ব্যবহৃত হয়।
    ৬.ভেড়া বা ছাগলের লোমঃ
    ভেড়া বা ছাগলের লোম ওরিয়েন্টাল ব্রাশ তৈরিতে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়।এছাড়াও বড় ক্যালিগ্রাফি ব্রাশ এবং ফ্ল্যাট ওয়াশ ব্রাশগুলোতেও ব্যবহার করা হয়।
    ৭.বাঘের লোমঃ
    বাঘের লোম লম্বায় অনেকটা নেকড়ের লোমের সদৃশ। এর লোমগুলো সাদা, কালো এবং হলুদ হয়ে থাকে। সবচেয়ে উন্নতমানের লোমগুলো বন্যপ্রাণীদের থেকেই পাওয়া যায়। তবে এই লোমের তৈরি ব্রাশগুলো পাওয়া অত্যন্ত বিরল এবং ব্যয়বহুল।

    রঙের তারতম্যের ভিত্তিতে পেইন্টিং ব্রাশের ভিন্নতা রয়েছে:

    ১.জলরঙের ব্রাশঃSable, synthetic sable or nylon
    ২.অয়েল পেইন্টিং ব্রাশঃSable or bristle
    ৩.অ্যাক্রেলিক ব্রাশঃNylon or synthetic

    ★★ক্যানভাসঃ
    ছবি আঁকার জন্য ক্যানভাস চিত্রশিল্পীদের নিকট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আজকাল অয়েল এবং অ্যাক্রেলিক পেইন্টিংগুলো বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ক্যানভাসে তৈরি করা হয়।ক্যানভাস তৈরি করতে দুটি প্রধান ফাইবার ব্যবহার করা হয়ঃ কটন এবং লিনেন(শণ)। তবে আধুনিক ক্যানভাসে পলিভিনাইল ক্লোরাইড (পিভিসি) সহ কটন বা লিনেন ব্যবহৃত হয়। এটি অন্যান্য হেভি কটন ফেব্রিক্স থেকে অনেকটা আলাদা। ক্যানভাস ফেব্রিক ভারী, দৃঢ় এবং টেকসই হয়। এটিকে জল প্রতিরোধী দুর্দান্ত বহিরঙ্গন ফেব্রিক হিসেবে তৈরি করা হয়।
    ক্যানভাস মূলত ২ ধরনের হয়ে থাকেঃ
    plain এবং duck। Duck ক্যানভাসের থ্রেডগুলি তুলনামূলক শক্ত করে বোনা হয়।
    যুক্তরাষ্ট্রে ক্যানভাস দুটি উপায়ে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়েছেঃ
    একটি ওজন দ্বারা (প্রতি বর্গক্ষেত্র আউন্স) এবং অন্যটি গ্রেড নম্বর সিস্টেম দ্বারা। সংখ্যাগুলি ওজনের বিপরীতে চলে তাই একটি 10 নম্বর ক্যানভাস 4 নম্বরের চেয়ে হালকা হয়। ক্যানভাস কাঠের প্যানেলগুলি প্রতিস্থাপন করে তেল চিত্রের জন্য সর্বাধিক সাধারণ সমর্থন মাধ্যম হয়ে উঠেছে। তেলরঙ শুকাতে দেরি হওয়ার কারণে শিল্পীদের কাছে এটি অপছন্দ ছিল।সাধারণত তেলরঙের ছবি শুকাতে তিন থেকে ছয় সপ্তাহ লাগে। তেলের মাত্রা ও রঙের পরিমাণ অনুযায়ী তা এক বছর পর্যন্ত হতে পারে। অনেকের মতে তেলরঙের ছবি শুকিয়ে উঠতে ষাট থেকে আশি বছরও সময় লাগে। কিন্তু পন্ঞ্চদশ শতাব্দীর পর থেকে ক্যানভাস কাপড় বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।আর তখন থেকে তেলরঙও ক্যানভাসের দোসর হয়ে ওঠে। তেলরঙেই আঁকা হয়েছে পৃথিবীর সবচেয়ে পরিচিত ছবি লিওনার্দো দ্যা ভিঞ্চির মোনালিসা, যা আঁকা হয়েছিল লোমবার্ডি পপলার কাঠের প্যানেলে।

    Writer:
    Abida Ferdousi
    Department of Textile Engineering
    Batch : 201
    BGMEA University of Fashion & Technology(BUFT)

    RELATED ARTICLES

    LEAVE A REPLY

    Please enter your comment!
    Please enter your name here

    Related News

    - Advertisment -

    Most Viewed