Friday, March 29, 2024
More
    HomeLife Style & Fashionছেলেদের জামায় বোতাম ডানে আর মেয়েদের বাঁয়ে কেন?

    ছেলেদের জামায় বোতাম ডানে আর মেয়েদের বাঁয়ে কেন?

    বস্ত্র এবং ফ্যাশন ডিজাইনের ক্ষেত্রে বোতাম(button) হচ্ছে একটি ছোট চাকতি আকৃতির বস্তু বিশেষ। এটি সাধারণত গোলাকার হয়,তবে অন্যান্য আকৃতিরও হতে পারে।আমাদের অধিকাংশ পোশাকেই বোতাম থাকে। সে কারণে পোশাকে ফুটে ওঠে সৌন্দর্য।সচরাচর কাপড়ের কোনো অংশ ঢেকে রাখতে বোতাম ব্যবহৃত হয় এবং কিছুক্ষেত্রে সৌন্দর্যবর্ধনের অলঙ্কার হিসেবে আভিজাত্য ফুটিয়ে তুলতে সোনা বা হীরার বোতাম ব্যবহারও স্বীকৃত।

    ব্রোঞ্জ যুগ থেকে লোকেরা ব্রোঞ্জের তৈরি বোতাম ব্যবহার করতে শুরু করেছিল। রেনেসাঁ যুগে বোতাম কেবল অলঙ্করণের উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হত। কিন্তু যখন রেনেসাঁ যুগে বোতামের মধ্যকার ছিদ্রের আবিষ্কার হয়েছিল, তখন বোতাম ব্যবহার জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। কথিত যে,খ্রিষ্টাব্দ ১৮৩০-১৮৫০ বোতামের স্বর্ণযুগ হিসেবে বিবেচিত হয়।

    বিভিন্ন প্রকার বস্তুর দ্বারা বোতাম তৈরি করা হতে পারে। এর মধ্যে কিছু আছে প্রাকৃতিক, আবার কিছু আছে কৃত্রিম। প্রাকৃতিক পদার্থগুলোর মধ্যে আছে পশুর হাড়, কাঠ, শিং, আইভরি, শামুক বা ঝিনুকের খোলস, নারকেলের খোলস, ইত্যাদি। আর কৃত্রিম পদার্থগুলোর মধ্যে আছে সেলুলয়েড, কাচ, ধাতু, ব্যাকেলাইট, প্লাস্টিক ইত্যাদি। 

    পোশাক ব্যবহৃত বিভিন্ন ধরণের বোতামের কাঁচামাল অনুযায়ী অনেক ধরণের বোতাম থাকতে পারে। তবে প্রধান ১০ টি নিম্নরূপ:

    1. প্লাস্টিক বোতাম

    2. ধাতব বোতাম

    3. কাঠের বোতাম

    4. ফ্যাব্রিক বোতাম

    5. শেল বোতাম

    6. গ্লাস বোতাম

    7. মুক্তো বোতাম

    8. আলংকারিক বোতাম

    9. চামড়া বোতাম

    10. সিরামিক বোতাম

    বিশ শতকের নানামুখী উদ্ভাবনের ফলে মানুষ প্লাস্টিকের বোতাম অধিকতর ব্যবহার শুরু করে। শক্ত প্লাস্টিক হচ্ছে বোতাম তৈরির সবচেয়ে সাধারণ কাঁচামাল এবং এখন প্লাস্টিকের বোতামই বেশি জনপ্রিয়। অন্যান্য পদার্থগুলো মূলত বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়।

    প্রথম যখন বোতাম আবিষ্কৃত হয়, তখন এটি ছিল খুবই মূল্যবান। শুধু ধনীদের পক্ষেই বোতাম লাগানো জামা পরা সম্ভব ছিল। এদিকে পুরুষেরা নিজেদের জামাকাপড় নিজে নিজেই পরত। পৃথিবীর শতকরা ৯০ ভাগ মানুষ ডানহাতি। আর ডানহাতিদের সুবিধার কথা ভেবে ছেলেদের বোতাম রাখা হতো জামার ডানে। তবে অভিজাত বা অবস্থাসম্পন্ন মেয়েরা নিজের হাতে জামা পরতেন না। পরিচারিকা বা কাজের মেয়েরা তাদের জামাকাপড় পরিয়ে দিত। পরিচারিকা যেহেতু মেয়েটির সামনে দাঁড়িয়ে জামার বোতাম লাগাত, তাই পরিচারিকার সুবিধার জন্য জামার বোতাম থাকত বাঁয়ে। আর অনেক কিছু পরিবর্তন হলেও প্রাচীন সেই রেওয়াজটি এখনো রয়েই গেছে।

    পোশাকের লম্বা আকৃতির খোলা অংশে একটি নির্দিষ্ট স্থান পরপর বোতাম লাগানো হয় এবং যে স্থানে বোতাম প্রবেশ করানো হয় তা বোতাম ছিদ্র (buttonhole) নামে পরিচিত। বোতাম সংক্রান্ত কিছু মানুষের ক্ষেত্রে একপ্রকার মানসিক ভীতি কাজ করে, যা কোউমপোউনোফোবিয়া (koumpounophobia) নামে পরিচিত।

    বাঁধন মজুমদার 

    নিটার ১০ম ব্যাচ

    RELATED ARTICLES

    LEAVE A REPLY

    Please enter your comment!
    Please enter your name here

    - Advertisment -

    Most Popular

    Recent Comments