Saturday, April 20, 2024
More
    HomeTechnical Textileসমুদ্র থেকে আহরিত কাপড়

    সমুদ্র থেকে আহরিত কাপড়

    মানুষের সব সময় চেষ্টা ছিলো বিভিন্ন বিষয়ে অভিনবত্ব আনা, প্রতিনিয়ত নতুন কিছু আবিস্কার করা যা সব থেকে আলাদা।টেক্সটাইল জগতে এমনি অভিনব কিছু আবিষ্কারের একটি হলো “সী সিল্ক” বা বাংলা ভাষায় যাকে বলা যায় সমুদ্র থেকে পাওয়া রেশম।


    পৃথিবীর অন্যতম দামী,বিরল এই ফাইবার তৈরি হয়
    সিল্কি ফিলামেন্ট দিয়ে যা নিঃসৃত হয় “পিন্না নবিলিস” নামক জাতীয় পেন শেলের নিম্নাংশে থাকা এক ধরনের গ্রন্থী থেকে।মলাস্কা প্রজাতির প্রাণীদের শরীর থেকে একপ্রকার ফিলামেন্ট নিঃসৃত হয় যাকে “বায়সুস” বলা হয়।এই প্রজাতির নিম্নাংশে অবস্থিত গ্রন্থী এই রস নিঃসরণ করে যা এই প্রাণী সমূহকে কোনো তলে আটকে রাখতে সাহায্য করে।ভূমধ্যসাগরে এই প্রজাতির প্রাণী পাওয়া যেতো বিংশ শতাব্দীর পূর্বে।যা থেকে পরবর্তীতে আবিষ্কার করা হয়েছে এই সিল্ক।এই ফিলামেন্ট গুলো ছয় সেন্টিমিটার বা এর কাছাকাছি আকারের হয়।এক প্রকার ঝিনুক থেকে পাওয়া এই ফিলামেন্ট কিভাবে প্রক্রিয়াজাত করে তাকে বুননের জন্য প্রস্তুত করা হয় তা আজো রহস্য।ইতালিতে এই ফাইবার পাওয়া যেত এবং সেখানেই তা দিয়ে কাপড় তৈরি করা হতো বলে ধারনা করা হয়।সমুদ্রের তীরবর্তী মানুষের কাছেই সন্ধান মিলেছে এই ফাইবারের তৈরি কাপড়ের।মূলত এক জোড়া হাত মোজার সন্ধান পাওয়া যায় এখন।এই ফাইবার থেকে কাপড় কিভাবে তৈরি হয় তার রহস্য আজও উন্মোচন হয় নি।এই ফাইবার থেকে কাপড় বুনন করা এক ধরণের ঐতিহ্য যা পারিবারিকভাবে সামনের দিকে এগিয়ে গিয়েছে।যারা এই ফাইবার সংগ্রহ থেকে বুনন এর সাথে জড়িত তাদের ধারণা এর রহস্য পরিবেশের জন্য ভয়াবহ হতে পারে।তাই রহস্য হিসেবে রাখা হয়েছে এই ফাইবারের সকল তথ্য।কাপড়ের রং কিছুটা খয়েরী।কিন্তু লেবুর রসে ভেজানো হলে এটি সোনালী রং ধারণ করে যা দীর্ঘস্থায়ী।এই রং কখনো নষ্ট হয় না। এই ফাইবার সূক্ষ সাধারণ সিল্ক ফাইবার থেকে,তার পাশাপাশি খুবই হালকা।হালকা হওয়া স্বত্ত্বেও এটি অনেক উষ্ণ।বলা হয় যে, এই ফাইবার এতটা সূক্ষ যে এর তৈরি এক জোড়া মোজা একটি আখরোটের খোসায় রাখা যায়।কিন্তু এই ফাইবার থেকে তৈরী কাপড় খুব সহজে
    বিভিন্ন পোকার আক্রমণে নষ্ট হয়ে যায়।এছাড়াও এই ফাইবার তৈরি হয়েছিল খুবই কম পরিমাণে কারণ এর পেছনে প্রচুর পরিমাণে পরিশ্রম ও খরচ রয়েছে।অতীতে ব্রিটিশ সেনাপ্রধান “হোতারও ন্যালসন ” তার প্রেমিকার জন্য এই ফাইবারের তৈরি মোজা পাঠিয়েছিলেন।কিন্তু এই শিল্পের বিলুপ্তি শুরু হয় বিংশ শতাব্দীর পর পর।প্রচুর পরিমাণে এই ঝিনুকের আহরণের ফলাফল হলো “পিন্না নবিলিস” পরিণত হয় বিলুপ্ত প্রজাতিতে।ইতালির সরকার এই কারণে এই প্রজাতির আহরণে নিষেধাজ্ঞা জারি করে।


    সিন্থেটিক ফাইবারের আবিষ্কার এবং প্রজাপতিটির বিলুপ্তির কারণে হারিয়েছে এই অতি মূল্যবান ফাইবার।আশার আলো দেখা যাচ্ছে না এখনো।এই প্রজাতির ঝিনুক এখন অন্যতম বিলুপ্ত প্রজাতি যার সংরক্ষণ নিশ্চিত করা গেলেও এর বিপুল পরিমাণে চাষ এখনো সম্ভব হয়নি।এই ফাইবার ইতিহাসে অন্যতম অধ্যায় হিসেবে থেকে যাবে।

    নামঃ চৈতি পাল
    সেমিস্টারঃ ২য় বর্ষ, প্রথম সেমিস্টার
    ব্যাচঃ ৩৯
    আহছানউল্লা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

    RELATED ARTICLES

    LEAVE A REPLY

    Please enter your comment!
    Please enter your name here

    - Advertisment -

    Most Popular

    Recent Comments