Friday, April 19, 2024
More
    HomeLife Style & FashionChiffon Fabric-আভিজাত্যের প্রতীক।

    Chiffon Fabric-আভিজাত্যের প্রতীক।

    বিভিন্ন ধরনের লাক্সারিয়াস ফেব্রিকের কথা উঠবে আর সেখানে  Chiffon Fabric এর নাম আসবে না এমনটা ভাবার কোনো যৌক্তিকতা নেই।রুপে-গুণে শিফন ফেব্রিক কোনো অংশেই কম নয় বরং কিছু কিছু দিক দিয়ে শিফনের অবস্থান অনেক উপরে। শিফন ফেব্রিককে অনেকেই হয়তো চিনে থাকবেন।অনেকে হয়তো এই ফেব্রিকটির নাম শুনেছেন কিন্তু সরাসরি দেখেননি। এই শিফন ফেব্রিককে অনেকেই আভিজাত্যের প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করে থাকেন। যখন থেকে এর ব্যবহার শুরু হয়েছিল তখন থেকেই এটি ধনীদের পোশাক হিসেবেই বিবেচিত হত।

    Chiffon fabric এর ইতিহাসঃশিফন শব্দটির উৎপত্তি হয়েছে ফরাসি  শব্দ “শিফে” বা  ”চিফে” থেকে যার অর্থ দাঁড়ায় কাপড় বা র্যা গ (Rag)। শিফন এর আবিষ্কার কোথায়, কখন বা কিভাবে হয়েছে তার সঠিক ধারণা এখনো পাওয়া যায়নি। তবে অনেকের মতে সর্বপ্রথম ফ্রান্সে এটি আবির্ভূত হয়েছিল।কিন্তু ১৭০০ এর দশক থেকেই সম্পূর্ণ ইউরোপে শিফনের ব্যবহার ছিল বলে প্রমান পাওয়া যায়। তখনকার সময়ে শিফন প্রস্তুত হত সিল্ক বা রেশমের সুতা দিয়ে।সেসময় শিফন ছিল ধনীদের পোশাক এবং আভিজাত্যের প্রতীক।১৯৩৮ সালে নাইলন আবিষ্কারের পরেই  সিন্থেটিক ফাইবার ব্যবহার করে তৈরি শিফনের আবিষ্কার হয়েছিল। ১৯৫৮ সাল পর্যন্ত বাজারে সিল্ক শিফন এর একচেটিয়া আধিপত্য ছিল। কিন্তু ১৯৫৮ সালে পলিয়েস্টার শিফনের প্রবর্তনের পর মানুষ সিল্ক শিফন বাদ দিয়ে পলিয়েস্টার শিফনের দিকে ঝুঁকে পরে।কারন পলিয়েস্টার শিফন ছিল তুলনামূলক কম দামি এবং সিল্ক শিফনের তুলনায় অধিক টেকসই। বর্তমান সময়েও মানুষের নিকট শিফনের চাহিদা ঠিক আগের মতই রয়েছে।১৯৮৬ সালে The George Washington University Museum এ সৌদিআরব থেকে আনা ঐতিহ্যবাহী শিফন ফেব্রিকগুলো আন্তর্জাতিক ভাবে প্রদর্শন করে থাকে। তখন থেকে এই ফেব্রিক এর প্রতি মানুষের আগ্রহ দিন দিন বাড়তে থাকে।

    Chiffon fabric এর প্রকারভেদঃ
    ১/ Silk crepe chiffon
    ২/ Jacquard chiffon
    ৩/ Double faced chiffon
    ৪/ Silk satin chiffon
    ৫/ Chameleon chiffon
    ৬/ Chiffon with coating
    ৭/ Pearl chiffon
    ৮/ Chiffon with lurex

    Chiffon Fabric এর বৈশিষ্ট্যঃ
    ১/ শিফন ফেব্রিকের অত্যন্ত নিখুঁত এবং স্বচ্ছ।
    ২/ শিফন ফেব্রিককে যখন ম্যাগনিফাইং গ্লাসের নীচে রাখা হয়, তখন এটিকে সূক্ষ্ম জালের মতো দেখায়।
    ৩/  খুব সহজে রঙ করা যায়।
    ৪/ এই ফেব্রিক হালকা হয়ে থাকে।
    ৫/ শিফন ফেব্রিক এর ড্রেপিং মান খুব ভালো।
    ৬/ এই ফেব্রিক এর একটি মসৃণ পৃষ্ঠ রয়েছে।
    ৭/এই ফেব্রিক এর বুনন খুব শক্তিশালী হয়ে থাকে।
    ৮/ শিফনের চমৎকার থার্মোরোগুলেশন বৈশিষ্ট্য রয়েছে।
    ৯/ শিফন ফেব্রিকের পানি অথবা ঘাম শোষণ ক্ষমতা খুবই উন্নত।

    Chiffon  Fabric এর ব্যবহারঃশিফন ফেব্রিককে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পরিধেয় পোশাক তৈরিতে ব্যবহার করা হয়।পোশাক গুলোর মধ্যে রয়েছেঃ
    ১/ Evening Gowns
    ২/ Summer Dresses
    ৩/ Bridal Costumes
    ৪/ Sarees and dupattas
    ৫/ Blouses
    ৬/ Lingerie
    ৭/ Shirts
    ৮/ Skirts
    ৯/ Scarves and sashes
    ১০/ Stoles
    ১১/ Pareo
    ১২/ Trousers
    ১৩/ Cardigans
    ১৪/ Vests
    তাছাড়া অনেকেই ঘরের দরজা জানালার পর্দা হিসেবে শিফন ফেব্রিকের তৈরি পর্দাকেই বেছে নেন। কারন শিফন ফেব্রিকের ফ্যাব্রিকের ঝলমলে চেহারা এটিকে আলংকারিক করে তোলে। তাছাড়া এর স্বচ্ছ এবং পাতলা বৈশিষ্ট্যের কারণে জানালা দিয়ে যে আলো প্রবেশ করে তা আরও বেশি দৃষ্টিনান্দনিক হয়ে উঠে। আবার এর লাক্সারিয়াস লুকের জন্য অনেকে এই শিফন ফেব্রিক দিয়ে ঘর ডেকোরেশনের কাজ করে থাকেন। 

    Chiffon Fabric উৎপাদনকারি দেশঃশিফনের কাপড়ের বৈচিত্র্য থাকার ফলে কোন দেশে সবচেয়ে বেশি শিফন ফেব্রিক উৎপাদন হয় তা বলা একটু কষ্টসাধ্য।  তবে চীন তৈরিকৃত শিফন ফেব্রিকের বৃহত্তম রপ্তানিকারক দেশ।কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তারা বিভিন্ন দেশে অবস্থিত তাদের চীনা কোম্পানিগুলোতে শিফন ফেব্রিক তৈরির কাঁচামাল গুলো পাঠিয়ে দেয় এবং সেখান থেকেই তারা শিফন ফেব্রিক ম্যানুফেকচারিং করে থাকে। তাছারা ভারতে শিফনের ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ায় ভারতে এখন বিপুল পরিমানে শিফন ফেব্রিক উৎপাদন হচ্ছে। এছাড়া এই তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশ,ফ্রান্স, পাকিস্তানসহ আরও অনেক দেশ।
    Chiffon Fabric ব্যবহারের কিছু অসুবিধাঃ
    ১/ ঝুলে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
    ২/ বেশিদিন ব্যবহারের ফলে ফেব্রিক ফেটে যাবার সম্ভাবনা থাকে।
    ৩/ এই ফেব্রিক একটু পিচ্ছিল ধরনের। তাই এই ফেব্রিক সেলাই করার সময় একটু সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।
    ৪/ শিফন ফেব্রিকের একটি বড় সমস্যা হল এই ফেব্রিক খুব সহজে তার আকৃতি হারিয়ে ফেলে।
    ৫/ এই ফেব্রিকের খুব বেশি পরিমান যত্নের প্রয়োজন হয়।

    Chiffon Fabric যত্নের কৌশলঃ

    ১/ সিল্ক শিফনকে ড্রাইওয়াশ করা প্রয়োজন।
    ২/ পলিয়েস্টার শিফন এবং নাইলন শিফনকে হাত দিয়েই ধোয়া যাবে।
    ৩/ ধোয়ার সময় এই কাপড়কে কোনোভাবেই মোচড়ানো যাবে না। ৪/ মৃদু বা হালকা ডিটারজেন্ট ব্যবহার করতে হবে।
    ৫/ ধোয়ার আগে কমপক্ষে ৩০ মিনিট ঠান্ডা পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে।কিন্তু খুব বেশি সময় ধরে ভিজিয়ে রাখা যাবে না। বেশিক্ষন পানিতে ভিজিয়ে রাখলে কাপড়ের রঙ নষ্ট হয়ে যাবার সম্ভাবনা থাকে।
    ৬/ সরাসরি সূর্যের তাপের সংস্পর্শে আনা যাবে না। 
    সেই শুরু থেকে এখন পর্যন্ত শিফন তার আভিজাত্যের গৌরব ধরে রেখেছে এবং দিন দিন এর চাহিদা বাড়তে শুরু করেছে।আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে বর্তমানে এই শিফন ফেব্রিক ব্যবহার করে তাদের ঐতিহ্যবাহী পোশাকগুলো তৈরি করছে ।ফলে ভারতে এর শিফন ফেব্রিক এর জনপ্রিয়তা বেড়েই চলেছে। ঠিক তেমনি বাংলাদেশেও এর চাহিদা এবং জনপ্রিয়তা ঊর্ধ্বমুখী। বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্পের মালিকরা এই শিফন ফেব্রিকের তৈরি কাপড় উৎপাদনে আগ্রহ দেখালে এই সেক্টরটি অল্প কিছুদিনের মধ্যেই খুব সাড়া পাবে বলে আশা করা যায়।

    Source:www.sewport.com

    www.masterclass.com

    www.tissura.com

    Writer:Omar Saif
    Department of Textile Engineering(3rd Batch)
    Jashore University of Science and Technology

    RELATED ARTICLES

    LEAVE A REPLY

    Please enter your comment!
    Please enter your name here

    - Advertisment -

    Most Popular

    Recent Comments