🍁 “বেক্সিমকো”, যার পূর্ণরুপ হচ্ছে বাংলাদেশ এক্সপোর্ট ইমপোর্ট কোম্পানি লিমিটেড । প্রাইভেট সেক্টরে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় এবং স্বনামধন্য গ্রুপ । বেক্সিমকো একটি বহুজাতিক মাল্টিন্যাশনাল হোল্ডিং কোম্পানি যা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ১৯৭০ সালে । যার প্রতিষ্ঠাতা আহমেদ সোহেল রহমান ও সালমান ফজলুর রহমান । বেক্সিমকো দেশের সবচেয়ে বড় বহুজাতিক কোম্পানি হওয়ার পাশাপাশি স্টক মার্কেটেও সবচেয়ে বেশি বাজার মূলধনের মালিক। বেক্সিমকো যে খাতগুলোতে বিনিয়োগ করেছে, সে খাতগুলো দেশের জিডিপিতে ৭৫ ভাগ অবদান রাখছে। বিশ্বের প্রায় ১০৮ টি দেশে বেক্সিমকোর পণ্যসমূহ রপ্তানি করা হয় । এছাড়া দক্ষিণ এশিয়া ও পূর্ব ইউরোপে এর বস্ত্র বিপণনকেন্দ্র রয়েছে । প্রায় ৭০,০০০ হাজার কর্মী কাজ করে বেক্সিমকোতে যা কিনা প্রাইভেট সেক্টরের মধ্যে সর্বোচ্চ । “Taking Bangladesh To The World” এই স্লোগানকে ধারণ করে প্রতিনিয়ত এগিয়ে যাচ্ছে বেক্সিমকো । পাশাপাশি বাংলাদেশের অর্থনীতিকে নিয়ে যাচ্ছে এক অনন্য উচ্চতায় ।
বহুজাতিক কোম্পানি হওয়ার দরুণ বেক্সিমকোর অনেকগুলো ব্যবসায়িক খাত রয়েছে । যেগুলো হলোঃ-
✔বিনিয়োগ
✔ব্যাংকিং অ্যান্ড ফিন্যান্স
✔ফার্মাসিউটিক্যাল
✔গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারিং
✔ক্লথিং রিটেইল
✔মিডিয়া
✔আইটি
এসকল খাতে বেক্সিমকো তাদের পন্য উৎপাদন এবং কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে । বেক্সিমকো গ্রুপের একটি সদস্য হচ্ছে বেক্সিমকো টেক্সটাইল ডিভিশন ।
🔹তো চলুন জেনে নেই বেক্সিমকোর টেক্সটাইল খাত সম্পর্কে ।
🍁বেক্সিমকো জুট ডিভিশনঃ
বেক্সিমকোর যাত্রা শুরু মূলত পাট রপ্তানির মাধ্যমেই । বেক্সিমকোর প্রতিষ্ঠাতা আহমেদ সোহেল ফাসিউর রহমান ও সালমান এফ রহমানের পারিবারিক পাটের ব্যবসা ছিলো তৎকালীন পাকিস্তান আমলে। যা কিনা পৃথিবীর সবচেয়ে বড় পাট উৎপাদক এবং রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান ছিলো । এই প্রতিষ্ঠান তখন “New Dacca Industries Ltd”(NDI) নামে পথচলা শুরু করেছিল। পরবর্তীতে ১৯৭২ সালে বেক্সিমকো প্রতিষ্ঠার পর, এই প্রতিষ্ঠানটি বেক্সিমকোর জুট ডিভিশন হিসেবে পরিচিতি পায় । বর্তমানে বেক্সিমকো পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে পাট, পাটের সুতা, পাটের দড়ি ইত্যাদি রপ্তানি করে থাকে । বিভিন্ন নামি-দামি কার্পেট ও অন্যান্য কাজে এই পাটের পণ্যসমূহ ব্যবহার করা হয় ইউরোপ এবং অ্যামেরিকায় । বিশেষ করে Tatami mat তৈরী করতে ব্যবহার করা বেক্সিমকোর রপ্তানিকৃত পাট। এটি বর্তমানে পৃথিবীর অন্যতম বৃহৎ পাট রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান ।
🍁বেক্সিমকো ফ্যাশন লিমিটেডঃ
বেক্সিমকো গ্রুপের একটি সদস্য হচ্ছে বেক্সিমকো ফ্যাশন লিমিটেড যা যাত্রা শুরু করে ১৯৯৭ সালে । এটি ১০০% এক্সপোর্ট অরিয়েন্টেডেড গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রি যা ঢাকা ইপিজেডে অবস্থিত ।
বেক্সিমকো ফ্যাশন লিমিটেড ৬ মিলিয়ন পিসেরও অধিক ভালো মানের পোশাক তৈরী করে বিভিন্ন নামি-দামি ব্রান্ড এবং রিটেইলারদের জন্য । এসব পোশাক সমূহ ইউরোপ, অ্যামেরিকা এবং ক্যানাডায় রপ্তানি করা হয় । মূলত অত্যধিক হাই কোয়ালিটির পণ্য উৎপাদন করাই এই প্রতিষ্ঠানের মূল লক্ষ্য । প্রতিদিন প্রায় ২০,০০০ হাজার পিস পণ্য উৎপাদন করে থাকে এই কোম্পানি ।
🍁বেক্সিমকো টেক্সটাইল এ্যান্ড অ্যাপারেল ডিভিশনঃ
দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ রেডিমেড গার্মেন্টসের যোগানদাতা বেক্সিমকো টেক্সটাইল এ্যান্ড অ্যাপারেল ডিভিশন । বিশ্বের বিভিন্ন স্বনামধন্য ইনস্টিটিউট যেমন-FID, NIFD ইত্যাদির সাথে পার্টনারশিপ রয়েছে বেক্সিমকোর । এসকল ইনস্টিটিউটের সাথে যোগসূত্র রেখে কাজ করে করে বেক্সিমকো । মূলত উন্নত মানের পোশাক তৈরীর লক্ষ্যে, এসকল প্রতিষ্ঠানের ডিজাইনারদের সাহায্য নিয়ে থাকে বেক্সিমকো। ফলে তাদের পোশাকসমূহ আরো অধিকতর ভালো মানের হচ্ছে দিন কে দিন । ইয়েলো হচ্ছে বেক্সিমকোর একটি আধুনিক অ্যাপারেল ব্রান্ড । যা ইতিমধ্যে ক্রেতাদের নজর কেড়েছে । মূলত ইয়েলোর ভিন্নধর্মী আধুনিক ও রুচিশীল পোশাকের নজরকাড়া বাহার আসলেই দারুণ এবং প্রশংসনীয় । প্রায় সকল ধরনের পোশাক সরবরাহ করে থাকে ইয়েলো । বাংলাদেশ ছাড়াও পাকিস্তানে ইয়েলোর আউটলেট রয়েছে । এছাড়া ২০১৪ সালে বেক্সিমকো ঘোষণা দিয়েছে,দুবাই, টরেন্টো এবং নিউইয়র্কে আরো ৩টি আউটলেট খোলার ।
🍁বেক্সিমকো সিনথেটিকস লিমিটেডঃ বেক্সিমকো সিনথেটিকস লিমিটেড, বেক্সিমকো গ্রুপের একটি সদস্য, যারা হাই কোয়ালিটির পলিয়েস্টারের ফিলামেন্ট ফাইবার উৎপাদন করে থাকে। এই কোম্পানির পথচলা শুরু হয় ১লা জুলাই,১৯৯৪ সালে।
উৎপাদিত ফাইবারসমূহকে দুভাগে ভাগ করা হয়ঃ
১.Partially Oriented Yarn (POY)
২.Texturized Filament Yarn(DTFY)
ইউরোপ ও অ্যামেরিকায় এ ফাইবারসমূহ রপ্তানি করা হয় । বেক্সিমকো সিনথেটিকস বছরে প্রায় ২৮ মিলিয়ন লিনিয়ার মিটার ফাইবার উৎপাদন করে থাকে । এগুলো হচ্ছে বেক্সিমকোর টেক্সটাইল ডিভিশনের প্রতিষ্ঠানসমূহ । দেশের টেক্সটাইল খাতে এগিয়ে নিয়ে যেতে বেক্সিমকো গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করছে ।
এছাড়াও বেক্সিমকোর অন্যান্য কিছু প্রতিষ্ঠান হচ্ছেঃ
➡আইএফআইসি ব্যাংক
➡শাইনপুকুর সিরামিকস
➡আকাশ ডিটিএইচ
➡ ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশন
➡বাংলাদেশ অনলাইন(BOL)
➡ঢাকা ডাইনামাইটস
➡দি ওয়েস্টিন হোটেলস
➡বেক্সিমকো পেট্রোলিয়াম লিমিটেড
➡বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস
➡বেক্সিমকো সিকিউরিটিজ লিমিটেড,
➡বেক্সিমকো পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড
➡বেক্সিমকো ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড
➡বেক্সিমকো কম্পিউটারস লিমিটেড ইত্যাদি ।
তথ্যসূত্রঃ beximco.com, Wikipedia
Writer:
Mohammad Rafi
DWMTEC(1st Batch)
Awesome review!!