Tuesday, April 23, 2024
More
    HomeCottonফাইবারের রাজা - তুলা ফাইবার

    ফাইবারের রাজা – তুলা ফাইবার

    তুলা ফাইবার হলাে ফাইবারের রাজা। প্রকৃতি থেকে সবচাইতে বেশি উৎপন্ন হয় এই তুলা ফাইবার, এবং তুলা ফাইবার হতে উৎপন্ন তুলা ফেব্রিক দ্বারা তৈরি পােশাক মানুষের সবচাইতে বেশি কমফোর্ট প্রদান করে।

    বীজ এবং ফলের আশগুলির মধ্যে তুলা বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ টেক্সটাইল ফাইবার হিসাবে আকারে বেড়েছে। প্রকৃতপক্ষে, তুলা বিশ্বের টেক্সাটাইল বাণিজ্য ও শিল্পের মেরদন্ড এবং মৌলিক ভিত্তি।

    তুলা হলো একটি উদ্ভিজ্জ ফাইবার যা তুলা গাছের পরিপক্ক ক্যাপসুল থেকে পাওয়া যায়। প্রায় ৪০ সেন্টিমিটার Slub, লাল এবং হলুদ বর্ণের পাতা এবং ফুল দিয়ে তুলা গাছ গঠিত। যখন ফুল ফেকুন্ডেটেড হয় তখন তার পাপড়ি পড়ে যায় এবং ২৫ দিনের মধ্যে ব্র্যাক নামে একটি পাতা ঘিরে একটি ক্যাপসুল বৃদ্ধি পায়। ক্যাপসুলটি নীচের প্রান্তে গােল ড্রপ আকার ধারণ করে। ক্যাপসুলের ভিতরে পাঁচ থেকে আটটি বীজ থাকে যার উপর ফাইবার তৈরি হয়। ক্যাপসুল পরিণত হয়ে গেলে চারটি অংশে বিভক্ত হয়।

    তুলার ইতিহাস :

    কাপড় তৈরির জন্য সুতা প্রয়ােজন। আর সুতা তৈরিতে কাচামাল হিসেবে যে সব তন্তু বা আঁশ ব্যবহৃত হয় সেগুলােকে টেক্সাটাইল ফাইবার বলে।প্রাকৃতিক ফাইবার গুলাের মধ্যে সর্বাধিক ব্যবহৃত ফাইবার হচ্ছে কটন বা তুলা।এটিকে প্রাকৃতিক সেলুলােজ ফাইবারও বলা হয়।

    খৃষ্টপূর্ব ৩,০০০ বছর পূর্বে ভারতীয় উপমহাদেশে প্রথম তুলা চাষ শুরু হয়। এছাড়াও দক্ষিণ আমেরিকার মেক্সিকোতে খুস্টপূর্ব ৩,৫০০ বছর এবং খৃষ্টপূর্ব ৫০০ বছর হতে আমেরিকায় তুলার চাষ প্রচলিত ছিল।

    ঐতিহাসিকদের মতে তুলার ব্যাবহার প্রথমে শুরু হয়েছিল ভূমধ্যসাগরীয় তথা আরবদেশ গুলােতে। মিশর হয়তাে এক্ষেত্রে প্রথম স্থান অর্জন করেছিল।

    পরবর্তীতে শিল্প বিপ্পবের পর ১,৩০০ শতাব্দীর গোঁড়া থেকে অর্থাৎ আজ থেকে প্রায় ৭০০ বছর পূর্বে ব্রিটেনে প্রথম তুলার ব্যাবহার শুরু হয়। আমেরিকাতে তুলার ব্যাবহার শুরু হয় আরও পরে, ১,৬০০ শতাব্দীর শেষের দিকে।

    এলি ভইটনি ১৭৯৩ সালে সুতির জিনের পেটেন্ট আবিস্কার করেছিলেন। যদিও পেটেন্ট অফিসের রেকর্ড থেকে বােঝা যায় যে লুইটনির পেটেন্ট আবিঙ্কারের দু’বছর আগে নাট হােমস নামে একজন মেশিনবিদ প্রথম সুতির জিন তৈরি করেছিলেন।

    প্রকারভেদ :

    বাণিজ্যিকভাবে চারটি প্রজাতির তুলা রয়েছে :

    ১. Gossypium hirsutum – উধ্ধ্বভূমি তুলা।
    মধ্য আমেরিকা, মেক্সিকো, ক্যারিবিয়ান এবং দক্ষিণ ফ্লোরিডা অঞ্চলে পাওয়া যায় (বিশ্বে উৎপাদন ৯০%)

    ২. Gossypium barbadense – অতিরিক্ত দীর্ঘ তুলা হিসাবে পরিচিত। গ্রীম্মন্ডলীয় অঞ্চল থেকে দক্ষিণ আমেরিকার স্থানীয় কিছু এলাকায় উৎপন্ন হয়। (বিশ্বে উৎপাদন ৮%)

    ৩. Gossypium arboretum – গাছের তুলা। ভারত এবং পাকিস্ভানের বিভিন্ন এলাকায় চাষ হয়। (বিশ্বে উৎপাদন ২% এরও কম.।

    ৪. Gossypium herbaceous – লেভান্ট সুতি, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং আরব উপদ্বীপে পাওয়া যায় (বিশ্বে উৎপাদন ২% এরও কম)

    তুলা ফাইবারগুলাে সাদা, বাদামী, গােলাপী এবং সবুজ রঙের ও হয়ে থাকে।

    বাংলাদেশে তুলার চাষঃ

    মসলিনের সুক্ষ আঁশ ছাড়া আর যে প্রকার তুলা বাংলাদেশে আগে থেকে উৎপন্ন হত তা
    “গােসিপিয়াম-আরবােরিয়াম” শ্রেণিভুক্ত। সাধারণত একে কুমিল্লা কটন নামে অভিহিত করা হতাে। এই তুলার তিনটি বাণিজি্যক নাম প্রচলিত যথা,লাংগুনিয়া, দোলা ও চাকুরিয়া। এই কুমিল্লা কটনের চাষ এখনাে কুমিল্লা ও চট্টগ্রামের পার্বত্য এলাকায় প্রচলিত আছে।
    পরবর্তীতে বাংলাদেশে তুলা উন্নয়ন বাের্ড বিভিন্ন দেশের তুলার বীজ এনে স্থানীয়ভাবে শংকরিত করে বিভিন্ন জাতের তুলা বীজ উৎপন্ন করেছে।
    এসব তুলার আঁশের দৈর্ঘ্য, রং এবং পরিপক্কতা বেশ ভাল। মেহেরপুর, জীবন নগর প্রভূতি কেন্দ্রের দীর্ঘ আঁশর তুলা ব্যবহার করে অন্য কোন সংমিগ্রণ ছাড়াই ৬০স কাউন্ট পর্যন্ত সুতা তৈরি করা সম্ভব হচ্ছে।

    তুলার চাষঃ

    তুলার সফল চাষের জন্য দীর্ঘ সময়, প্রচুর রােদ এবং মাঝারি বৃষ্টিপাতের প্রয়ােজন হয়, সাধারণত ৬০ থেকে ১২০ সেমি (২৪ থেকে ৪৭ ইঞ্চি) পর্যন্ত। মাটি সাধারণত মােটামুটি ভারী হওয়া দরকার ।

    তবে বর্তমানে তুলার একটি বড় অংশ কম বৃষ্টিপাত সহ এমন অঞ্চলে চাষ করা হয় যেখানে সেচের মাধ্যমে পানি দেওয়া হয়।উত্তর গােলার্ধে বসন্তে রােপণের সময় ফেব্রুয়ারির শুরু থেকে জুনের শুরু পর্যন্ত পরিবর্তিত হয়।

    আধুনিক বাণিজ্যিক সুতি ফাইবারের মধ্যে হলুদ রঙের অফ-হােয়াইট টাইপের বাদে অন্য রঙের তুলাও চাষ করা যায়। প্রাকৃতিকভাবে রঙিন
    তুলাে লাল, সবুজ এবং বাদামির বেশ কয়েকটি শেডে আসতে পারে।

    তুলার বৈশিষ্ট্যঃ

    ১.আরামদায়ক
    ২.ভাল শােষণ ক্ষমতা
    ৩.রঙ ধারণ ক্ষমতা বেশি
    ৪.ভালমত প্রিন্ট করা যায়
    ৫.সেলাই করা সহজ ইত্যাদি

    কটনের অ্যাপ্লিকেশনঃ

    ১.পােশাক : ব্লাউজ, শার্ট, বাচ্চাদের পােশাক, সাঁতারের পােশাক সুট, জ্যাকেট, প্যান্ট, সায়েটার, হােসিয়ারি ইত্যাদি

    ২.হোম ফ্যাশন: পর্দা, চাদর, তােয়ালে, টেবিল কাপড়, টেবিল ম্যাট, ন্যাপকিনস ইত্যাদি।

    ৩.প্রযুক্তিগত অ্যাপ্লিকেশন।

    ৪.চিকিৎসা এবং প্রসাধনী অ্যাপ্লিকেশন ব্যান্ডেজ, ক্ষত প্লাস্টার ইত্যাদি।

    কটন ফাইবারের গ্রেডিং(Grading of Cotton Fiber):

    1. দৈর্ঘ্যের উপর ভিত্তি কটুল
    2. ট্রাশ কনটেন্টের উপর ভিত্তি করে

    কটন ফাইবারের মূল বিবেচ্য বিষয়সমূহ :

    1. কটনের রং
    2. কটনের ট্রাশ
    3. কটন প্রস্তুত প্রণালী

    কটনের ট্রাশ (Cotton Trash):

    কটন মান অনুযায়ী ট্রাশের পরিমাণ ১% থেকে ১৫% হয়ে থাকে। পরিঙ্কার-পরিচ্ছন্ন তুলার মধ্যে ১% এবং নিম্নমানের তুলার মধ্যে ১৫% পর্যন্ত ট্রাশের পরিমাণ হয়ে থাকে।১৫% এর বেশি যদি ট্রাস্টের পরিমাণ হয়ে থাকে তাহলে তা রিজেক্ট করে দেওয়া হয়।

    Source :
    Textile Fiber Book (M.A. Sayem),
    Textile Fiber Book (Mohibul Islam),
    Wikipedia,
    Textile Lab

    Writer Information :
    Israt Jahan Nadia
    Department Of Clothing & Textile, Batch:35, 1st Year
    College Of Home Economics

    RELATED ARTICLES

    LEAVE A REPLY

    Please enter your comment!
    Please enter your name here

    - Advertisment -

    Most Popular

    Recent Comments