Friday, April 19, 2024
More
    HomeSilkরেশমে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাঃ বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ড

    রেশমে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাঃ বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ড

    রেশম সুতা / সিল্ক ফাইবার প্রাকৃতিক ফাইবারগুলোর মধ্যে অন্যতম।রেশম শিল্পের রয়েছে সমৃদ্ধ ও সুখ্যাত ইতিহাস। বাংলাদেশেও নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে রেশম শিল্প টিকে রয়েছে।

    রেশম শিল্পের উদ্ভব ঘটে প্রায় ২৫০০ বছর আগে চীনে।চীন তার গোপনীয়তা নীতির কারণে ঐ সময়ে রেশম শিল্প সারাবিশ্বে ছড়াতে পারে নি।তবে,একসময় তা ভারতীয় উপমহাদেশ সহ অন্যান্য কিছু দেশে ছড়িয়ে পড়ে।মোঘল আমলে ষোড়শ ও সপ্তদশ শতাব্দীর দিকে ভারতে প্রচুর পরিমাণ রেশম চাষের খবর পাওয়া যায়। বাংলাদেশে রেশম চাষের গোড়াপত্তন ঘটে এবং রেশম চাষের অগ্রগতি ঘটে নবাব আমলে। এরই আবহে ১৯১৪ সালে বাংলাদেশে রেশম চাষের উন্নয়ন ও প্রসারের জন্য আলাদা বিভাগ গড়ে তোলা হয়। ১৯৪৭ সালে ভারতবর্ষ ভাগের পর বাংলাদেশের রেশম চাষ কার্যক্রম শিল্প ও বাণিজ্য বিভাগের অধীনে ছিল।তবে ১৯৬০-৬১ সালে রেশম চাষ কার্যক্রম চলে যায় ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প সংস্থা (ইপসিক) এর অধীনে। এ সময় রেশম বীজাগার স্থাপন,রেশম চাষ পদ্ধতির সাথে সংশ্লিষ্ট নানা বিষয়, ইন্সটিটিউট স্থাপনসহ ভূতপূর্ব অগ্রগতি হয় রেশম শিল্পের। এরপর,১৯৭১ সালের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত বিসিকের আওতাধীন ছিল রেশম শিল্প। রেশম শিল্পের গুরুত্ব ও  এর চাহিদার কথা মাথায় রেখে বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর থেকেই রেশম শিল্পের উন্নয়নের জন্য কি কি পদক্ষেপ নেওয়া যায়,তা নিয়ে আলাপ-আলোচনা চলতে থাকে।ফলশ্রুতিতে, ১৯৭৪ সালে নাটোরের উত্তরা গণভবনে বঙ্গবন্ধু কর্তৃক স্বতন্ত্র রেশম বোর্ড প্রতিষ্ঠার ধারণা থেকে ১৯৭৭ সালের ২৮ শে ডিসেম্বর ৬২ নং অধ্যাদেশের মাধ্যমে বাংলাদেশ রেশম বোর্ড গঠিত হয়। তবে,১৯৭৮ সাল থেকে বোর্ডের কার্যক্রম শুরু হয়।আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি, দারিদ্র্য বিমোচন ও আর্থ সামাজিক অবস্থার উন্নয়নই ছিল এ বোর্ডের প্রধান লক্ষ্য। তবে ০৬ মার্চ, ২০১৩ সালে ১৩নং আইন অনুযায়ী, বাংলাদেশ রেশম বোর্ড, রেশম গবেষণা ও  প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউট এবং সিল্ক ফাউন্ডেশনকে একত্রে ‘বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ড ‘ রাজশাহীতে গঠন করা হয়।যা বাংলাদেশ সরকারের বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের অধীনে পরিচালিত সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান। 

    বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ড ১৪ সদস্যবিশিষ্ট পরিচালনা পর্ষদের দ্বারা গঠিত। এর চেয়ারম্যান, মাননীয় মন্ত্রী, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়। ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে থাকেন সচিব, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়। এছাড়া জাতীয় সংসদের মাননীয় সংসদ সদস্য, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাবৃন্দ,বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকবৃন্দ এবং রেশম চাষের সাথে নিবিড়ভাবে সংশ্লিষ্ট ও শিল্পের সহিত জড়িত সম্মানিত ব্যক্তিবর্গদের নিয়ে এ বোর্ড গঠিত। তবে,এ বোর্ডের পরিচালক হিসেবে থাকেন একজন মহাপরিচালক। তিনি এ বোর্ডের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য সচিব। 

    প্রশাসন ও সংস্থাপন বিভাগ,অর্থ ও পরিকল্পনা বিভাগ,সম্প্রসারণ ও প্রেষণা বিভাগ, উৎপাদন ও বাজারজাতকরণ বিভাগ এই চারটি মূল বিভাগ দ্বারা এ বোর্ড পরিচালিত হয়।এছাড়া গবেষণা, প্রশিক্ষণ, নিরীক্ষা শাখা,জনসংযোগ শাখা সরাসরি মহাপরিচালক নিয়ন্ত্রণ করলেও বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ড বাংলাদেশ সরকারের বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন।

    রেশম চাষ বিষয়ক নানা বৈজ্ঞানিক, কারিগরি ও আর্থিক, প্রশিক্ষণ ও গবেষণা উদ্যোগ,তুঁত চাষ,রেশমগুটি চাষ ও রেশম সুতা তৈরির সামগ্রিক উন্নয়নের কাজ করে থাকে এ বোর্ড ।এছাড়া বাংলাদেশের রাষ্ট্রায়ত্ত রেশম কারখানা গুলি পরিচালনা করে থাকে।

    বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ড গঠিত হওয়ার পর রেশম শিল্পের ব্যাপক পরিচিতি ও অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। গ্রামবাংলা,বিশেষ করে,রাজশাহী অঞ্চলের গরিব মানুষেরা রেশম শিল্পের সাথে জড়িত হয়ে তাদের অর্থনৈতিক অবস্থার পরিবর্তন ঘটাচ্ছে। গ্রামের দুঃস্থ মহিলারা রেশম পোকা পালন করে নিজেদের সাবলম্বী করছে।বাংলাদেশের রাজশাহীর রেশমি শাড়ি পৃথিবী বিখ্যাত।সুতরাং রেশমের উপর ভিত্তি করে, আমার বিশ্বাস,বাংলাদেশের অর্থনীতি সমৃদ্ধ ও শক্তিশালী হবে এবং বাংলাদেশ পাবে নতুন উচ্চতা। 

    References:
    1. Wekeapedia 
    2. www.bsb.gov.bd

    Written By:
    Jahid Hasan Shovon 
    Department of Textile Engineering (10th batch)
    National Institute of Textile Engineering and Research.

    RELATED ARTICLES

    LEAVE A REPLY

    Please enter your comment!
    Please enter your name here

    - Advertisment -

    Most Popular

    Recent Comments