Friday, March 29, 2024
More
    HomeFashion House Reviewবেক্সিমকোর হাত ধরে ইয়েলোর (YELLOW) এগিয়ে চলা

    বেক্সিমকোর হাত ধরে ইয়েলোর (YELLOW) এগিয়ে চলা

    বাংলাদেশের ফ্যাশন ব্র্যান্ড পরিচয়- (পর্ব-০৩)

    The trendiest fashion brand YELLOW 💛

    সচরাচর যারা ব্র্যান্ডের পোশাক পরে থাকেন তারা ইয়েলো (YELLOW) নামটি হয়ত শুনে থাকবেন। দেশের ফ্যাশন খাতে তারা ২০০৪ সাল থেকে ব্যবসা করে আসছে। আজ ইয়েলো নিয়ে কিছু লিখার চেষ্টা করলাম।

    এইতো খুব বেশি কাল আগের কথা নয় একটা সময় ছিল যখন বাংলাদেশের বিভিন্ন গার্মেন্টস শুধুমাত্র পোশাক রপ্তানি অবধি সন্তুষ্ট থাকত। কিন্তু সময় যত গড়িয়েছে আমাদের পোশাক শিল্পেও এখন নানা পরিবর্তন এসেছে। বদ্ধ চিন্তাভাবনার বাইরে এসেও বিভিন্ন গার্মেন্টস ও একক মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান গুলো তাদের নিজস্ব পোশাক দেশের বাজারে নিয়ে আসার মত সাহস দেখিয়েছে।

    এই পরিবর্তনের হাওয়ায় বেক্সিমকোর অবদান ও কম নয়। ১৯৭০ এর দশকে দুই ভাই আহমেদ সোহেল ফসিউর রহমান ও সালমান ফজলুর রহমান বেক্সিমকো গ্রুপ প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমানে বাংলাদেশের স্বনামধন্য কয়েকটি কোম্পানির মধ্যে ও বেক্সিমকো একদম উপরের সারিতে অবস্থান করছে। গত ৫০ বছরের ও বেশি সময় ধরে তারা বাংলাদেশ এর বিভিন্ন খাতে অবদান রেখে আসছে। দেশের পোশাক খাতকে সমৃদ্ধ করতে তারা এখন পর্যন্ত নানা উদ্যোগ হাতে নিয়েছে।
    এছাড়াও বেক্সিমকো বাংলাদেশ এর সববৃহৎ ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানি। বেক্সিমকো এর অধীনে প্রায় ৬৫০০০ লোক কাজ করে (সোর্স: উইকিপিডিয়া)। যা বাংলাদেশ এর প্রাইভেট সেক্টর গুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ।

    দেশিয় পোশাক খাতের সুনাম বিশ্ব বাজারে ছড়িয়ে দিতে বেক্সিমকো আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড গুলোর আদতে তাদের নিজস্ব পোশাক ব্র্যান্ড ইয়েলো উন্মোচন করেছে। বেক্সিমকো ইতিমধ্যে ইয়েলো এর মাধ্যমে দেশিয় পোশাক ও বাংলাদেশকে বিশ্বের বাজারে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা শুরু করে দিয়েছে।

    ইয়েলো মূলত ২০০৪ সালে তাদের প্রথম যাত্রা শুরু করে। আন্তর্জাতিক মানের চলমান ফ্যাশনেবল ডিজাইন ও পোশাক তৈরির মাধ্যমে ইয়েলো ইতিমধ্যে বাংলাদেশ এর আধুনিক সমাজে ব্যপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। বাংলাদেশ ও পাকিস্তান মিলিয়ে তাদের মোট ১৯টি দোকান চালু রয়েছে। ইতিপূর্বে ইয়েলো তাদের অনলাইন মার্কেটিংয়ে ও তাদের পদচারণা রেখেছে।

    ইয়েলো মূলত চলমান ফ্যাশনেবল পোশাক তৈরির জন্য সমাদৃত। তারা আন্তর্জাতিক মানের ডিজাইন ও কাপড় তৈরির জন্য বাজারের অন্য সব ব্র্যান্ড থেকে আলাদা। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তারা তাদের গ্রাহকদের দ্বারা অনুপ্রাণিত, চমৎকার ডিজাইন ও রঙের সমন্বয়ে একটি পোশাক তৈরি করে।

    বেক্সিমকোর হাত ধরে ইয়েলো খুব বড় আকারে সম্প্রসারন করার পথে এগোচ্ছে। সময়ের সাথে সাথে এটি একটি লাইফস্টাইল ব্রেন্ড এ পরিনত হয়েছে। ঢাকায় বসুন্ধরা সিটি শপিং মল ও যমুনা ফিউচার পার্কের ইয়েলো শপটি বাংলাদেশে ইয়েলোর সবচেয়ে বড় শপ। এটি সমাজের সকল শ্রেনীর পুরুষ, মহিলা, শিশু সহ যেকোনো বয়সের পোশাক, সুগন্ধি পন্য, হোম টেক্সটাইলসহ নিত্য প্রয়োজনীয় ও আধুনিক সব পন্য বিক্রি করে থাকে।

    ইয়েলো এখন শুধুমাত্র আমাদের দেশেই সীমাবদ্ধ নয়। দেশিয় মানুষের পন্যের চাহিদা মিটিয়ে এর খ্যাতি ইতিমধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে দিতে ইয়েলো প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
    তাইতো বিশ্বব্যাপি স্বনামধন্য ব্র্যান্ড (যেমন ক্যালভিন ক্লেইন, এইচএন্ডএম, জেসি পেনি, ম্যাকিস, জারা, ইউনিসেফ, রয়েল ডল্টন, ভিলরোয় এবং বোচ ইত্যাদি) তাদের গার্মেন্টস পন্য রপ্তানি করে বর্তমানে বেক্সিমকো তাদের ব্র্যান্ড ইয়েলো বৈশ্বিক বাজারে নিয়ে যাওয়ার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।

    বেক্সিমকো-এর সিইও সৈয়দ নাভেদ হোসেইন বলেন, “ইয়েলো ইতিমধ্যে বাংলাদেশ এর এক নাম্বার ব্র্যান্ড। আমরা ইতিমধ্যে অ্যামাজন গ্লোবাল এর সাথে পার্টনারশিপ করেছি, ইয়েলো বিশ্বব্যাপি গ্রাহকদের কাছে পৌঁছে দিতে। খুব শীঘ্রই ভারতেও ইয়েলো পৌঁছে যাবে। ভবিষ্যতে আমরা ভারতীয় দোকানীদের সাথেও চুক্তি করতে পারি ওখানে আমাদের খুচরা শপ তৈরির জন্য।‌ এর পাশাপাশি বেক্সিমকো ইয়েলো সুদূর প্রাচ্যে ছড়িয়ে দিতে পার্কসন, মিতসুই ও সিটিজি গ্রুপের সাথেও চুক্তি করেছে।

    আমরা নিউইয়র্ক এর টাইমস স্কয়ারে একটি অফিস চালু করেছি যা আমাদের মার্কেটিং ও ব্র্যান্ডিং এর লক্ষ্য কাজ করবে। যদিও নতুন অফিসটা আমরা আমাদের পন্য রপ্তানি দিকটি পর্যবেক্ষনেই চালু রয়েছে তবে পরবর্তীতে আমরা আমাদের ব্র্যান্ড ইয়েলো এতে অন্তর্ভুক্ত করব” । ইয়েলো কে শীঘ্রই বিশ্ব বাজারে নিয়ে যাওয়ার দৃঢ় আকাঙ্ক্ষা নিয়ে নাবেদ হুসেইন উক্ত মন্তব্য করেন।

    দেশের গন্ডি পেরিয়ে ইয়েলো পুরো বিশ্বে নিজেদের পদচিহ্ন রাখবে তা বলাই বাহুল্য। বাংলাদেশে টেক্সটাইল খাতে বর্তমানে এমন আরও অনেক উন্নত মানের ব্র্যান্ড উঠে আসছে। দেশের পোশাক খাতে দেশিয় ব্র্যান্ডদের এমন প্রতিধন্দ্বিতা মূলক মনোভাব আমাদের পোশাক শিল্পের জন্যই ভালো। এতে ব্র্যান্ড গুলোর মান আরও উন্নত হবে এবং সৃষ্টিশীল কাজের চলাচল বাড়বে। ইয়েলো বৈচিত্র্যময় ও রুচিশীল কাজের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ও নিজেদের অবস্থান তৈরি করছে। পরিশেষে দেশ ও দেশের বাইরে ইয়েলো মানুষের মন জয় করুক এটাই প্রত্যাশা।
    তথ্যসূত্র: এপ্যারেল রিসোর্স

    Sazib Bhowmick
    National institute of textile engineering and research (NITER),
    9th batch
    Email- [email protected]

    RELATED ARTICLES

    LEAVE A REPLY

    Please enter your comment!
    Please enter your name here

    - Advertisment -

    Most Popular

    Recent Comments