Friday, April 26, 2024
More
    HomeTechnical Textileমিল্ক থেকে ফাইবার

    মিল্ক থেকে ফাইবার


    মিল্ক বা দুগ্ধজাত পণ্য বলতে আমরা সাধারণত খাবার জাত কোন পন্যকে বুঝি। কিন্তু সেই মিল্ক থেকে যে টেক্সটাইল ফাইবার বানানো যায় এটা আমরা কয়জন জানি!! শুনতে অদ্ভুত লাগলেও এটা সম্ভব! ভাবতেই অবাক লাগে তাই না। আবক লাগলেও এটা সত্যি যে মিল্ক থেকে এক ধরনের প্রোটিন ফাইবার পাওয়া যায়।

    মিল্ক যে আমাদের খাদ্যের চাহিদা মেটায় তাই নয় মিল্ক আমাদের বস্ত্রের চাহিদাও মিটায়। আপনি কি জানেন মিল্ক থেকে প্রাপ্ত ফাইবার হচ্ছে কেসিন ফাইবার? তাহলে চলুন জানা যাক ক্যাসিন ফাইবার সম্পর্কে…

    ১৯৩০ সালে সর্ব প্রথম অ্যামেরিকা ও ইটালিতে এ ফাইবার আবিষ্কার করা হয়। অ্যামেরিকাতে যা মিল্ক ক্যাসিন নামে পরিচিত। এটি তৈরির কৌশল অনেকটা রেয়ন বা ভিস্কোস(Rayon or viscose) এর মতো। তবে এটি একটি রিজেনারেটেড প্রোটিন ফাইবার, রিজেনারেটেড সেলুলোজ ফাইবার নয়, তাই এটি উল(wool) ফাইবারের বিকল্প হিসাবেও ব্যবহার করা হয়।

    এবার চলুন তাহলে জেনে নেই মিল্কের রং সাদা হয় কেন?

    মিল্কে কোলেস্টেরলের উপাদান হিসাবে ফসফরাস ও ক্যালসিয়াম থাকে এবং সাথে থাকে ক্যাসিন নামক রঞ্জক যার কারনে মিল্ক সাদা হয়। এজন্য মিল্ক ফাইবার দেখতে সাদাটে।

    স্টাপল ফাইবার:

    মিল্ক ফাইবার আন্তর্জাতিক পরিবেশগত টেক্সটাইলগুলির জন্য ওকো-টেক্সট স্ট্যান্ডার্ড ১০০ গ্রীণ সার্টিফিকেট পেয়েছে।

    ক্যাসিন হচ্ছে এক ধরনের সিনথেটিক ফাইবার। যা heathy, light,colourful। এতে ১৮ রকমের অ্যামাইনো এসিড থাকে যা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী এবং ত্বকের জন্য সহায়ক। মিল্ক ফাইবার টেকশই এবং ব্যাক্টেরিয়া রোধী হয়, কেননা এই ফাইবার এ একটি বিশেষ স্পিনিং সলভেন্ট, মাইক্রো জিংক আয়ন ব্যবহৃত হয়। এটি স্টাপল (staple), টো ( Tow) আকারে উৎপাদিত হয়।

    মিল্ক বা ক্যাসিন ফাইবার যেভাবে প্রস্তুত করা হয়-

    পাস্তুরিত দুধ থেকে এসিড ট্রিটমেন্টের মাধ্যমে মূলত ক্যাসিন পাওয়া যায়। ক্যাসিন কে কস্টিক সোডার দ্রবণে দ্রবীভূত করা হয়। দ্রবণটিকে অনেকক্ষন ধরে তৈরি করা হয় যতক্ষন না পর্যন্ত উপযুক্ত সান্দ্রতা প্রাপ্ত না হয়। এরপর এটাকে পরিস্রাবিত করা হয়।

    স্পিনিং দ্রবণটি সালফিউরিক অ্যাসিড (২ অংশ), ফর্মালডিহাইড (৫ অংশ), গ্লুকোজ (২০ অংশ) এবং পানি (১০০ অংশ) সমন্বিত একটি বাথের মধ্যে স্পিনিরেটসের মাধ্যমে এক্সট্রুশন করা হয়। ভিস্কোসের ফিলামেন্ট যেভাবে জমাট বাধানো হয়, একইভাবে এটাও জমাট বাধানো হয়।ক্যাসিনকে প্রথমে জমাট বাঁধানোর পর তা শুকানো হয়। একপর্যায়ে এটি শুকিয়ে সুক্ষ্ম পাউডারের মতো রূপ ধারন করে।

    পরবর্তী পদ্ধতিতে ফাইবার কে রাসায়নিক ভাবে প্রভাবিত করা হয় এবং টুইস্ট দেওয়া হয়। এই পদ্ধতিকে ” হার্ডেনিং ” বলে। এরপর ফিলামেন্টকে পুনঃবিন্যাস করা হয়। আফটারট্রিটমেন্ট (After treatment) করা হয়, ধোয়া ও শুকানো হয়, মেশিনের সাহায্য ক্রিম্প( crimp) দেয়া হয়। শেষে স্টাপল (Staple) ফাইবার হিসেবে কাটা হয় অথবা উলের সাথে ব্লেন্ডিং এর জন্য প্রসেস করা হয়।

    ক্যাসিন ফাইবার দুই রকমের।
    1.Rennet casein
    2.Acid casein

    Acid casien ফাইবার স্পিনিং এর ক্ষেত্রে বেশি ব্যবহার করা হয়।

    ফাইবার propertiesঃ

    ১. ন্যাচারাল ফাইবারের মতো ময়েশ্চার Absorb করতে পারে।
    2.দেখতে অনেকটা সিল্ক ফাইবারের মতো।
    ৩. এটা hygienic & Flexible
    ৪. অতি বেগুনি রশ্মি প্রতিরোধক্ষম।
    ৫.শক্তিশালী উজ্জ্বল রঙের।
    ৬.ন্যাচারালি আন্টি ব্যাক্টেরিয়াল।
    ৭.নরম, মোলায়েম, সব ধরনের স্কিন এর জন্য ব্যবহার উপযোগী।

    বিভিন্ন টেক্সটাইল ক্ষেত্রে এ ফাইবার ব্যবহার করা হয়।যা মানব জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে। তাহলে এবার আরোচনা করা যাক মিক্ল বা ক্যাসিন ফাইবারের ব্যবহার সম্পর্কে ঃ
    ১.চোখের মাক্স
    ২.বাচ্চাদের পোশাক
    ৩.টুপি
    ৪.স্টক ( socks)
    ৫.sports wear
    ৬.টি-শার্ট
    ৭.ছোট বাচ্চাদের টাওয়াল
    ৮.মহিলাদের শীতের পোশাক

    ক্যাসিন ফাইবার ব্যবহারের উপকারিকা ঃ
    ১.এটি নরম, মোলায়েম, পরিবেশবান্ধব।
    ২.এটি দেখতে অনেকটা স্লিক(silk) ফাইবারের মতো।
    ৩. এটি renewable , biodegradable, eco -friendly.
    ৪.এই ফাইবার মানুষের শরীরের জন্য উপকারী।
    ৫.এটাকে “গ্রিন প্রোডাক্ট” বলা যেতে পারে, কারন
    এটাতে কোন ফরমালডিহাইড থাকে না।
    ৬.এই ফাইবার এর পিএইচ (Ph) ৬.৮, যেটা মানুষের ত্বকের কাছাকাছি । তাই এই ফাইবার দিয়ে বানানো পণ্য মানুষের জন্য বেশি উপযুক্ত।
    ৭.পানি পরিবহনযোগ্যতা এবং বাতাস প্রবেশ্যতা ভাল।

    ক্যাসিন ফাইবারে ব্যবহারের কিছু অসুবিধা:

    ১. এটি দ্বারা তৈরি কাপড় ধোয়ার পর ভাজ পরে যায় এবং প্রতিদিন আইরণ করতে হয়।
    ২. এটির স্থায়িত্ব কম।
    ৩.এ ফাইবার উৎপাদন খরচ ব্যায়বহুল।
    ৪.এ ফাইবার নরম হওয়াতে মেশিনে ধোয়া উচিৎ নয়, কেননা এটি বেশি শক্ত হয় না।

    ক্যাসিন ফাইবারের কি ভাবে যত্ন নেয়া হয়ঃ
    ১. ডিসাইজিং(Desizing): এনজাইম পণ্যগুলির ph যাতে ৪ থেকে ৬ এর মধ্যে থাকে যাতে ব্যবহারে কোনো সমস্যা না হয়।
    ২. স্কাউরিং( Scouring): সিন্থেটিক ডিটারজেন্ট ব্যাবহার করলে পিএইচ ৬ এর মধ্য রাখতে হবে।
    ৩. ব্লিচিং ( Bleaching): মিল্ক বা কেসিন ফাইবার সাধারণত সাদা হয়, তাই ব্লিচিং এর তেমন প্রয়োজন হয় না। যদি ব্লিচিং দরকার হয় তাহলে সোডিয়াম পাইরোফসফেট ব্যবহার করে পিএইচ ৮ এ হাইড্রোজেন পারক্সাইড – দিয়ে ব্লিচিং করা যেতে পারে।
    ৪. ডায়িং ( Dyeing): এসিড, ব্যাসিক, ডিরেক্ট এবং ডিসপার্স ডাই ব্যবহার করা যাবে। ডাই লিকার এর পিএইচ ৪-৬ এবং ডায়িং তাপমাত্রা ৯০-৯৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রাখতে হবে।
    ৫. প্রিন্টিং ( Printing): ব্লক, স্ক্রিণ এবং রোলার প্রিন্টিং ব্যবহার করা করা হয় । এসিড, ক্ষার ডিরেক্ট, অ্যাজয়িক পিগমেন্ট ডাই ব্যবহার করা যায়।

    মিল্ক ফাইবারের ম্যানুফ্যাকচারার বা উৎপাদক :

    ১.সায়ার্ন টেক্সটাইল কো. লিমিটেড,
    ২. ফ্যাবম্যান ফেব্রিক্স এন্ড ম্যানুফ্যাকচার,
    ৩. ইউরোফ্লাক্স ইন্ডাস্ট্রিস,
    ৪. চায়না এক্সএইচ মার্ট টেক্সটাইল কো. লিমিটেড।

    মিল্ক বা ক্যাসিন ফাইবার মূলত উলের বিকল্প হিসাবে ব্যবহার করা যাতে পাড়ে। এছাড়া আমরা নতুন বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন ফাইবার তৈরি করতে পারবো।

    Source: Google

    Writer information:
    Nafiza Nizami
    Department of Textile Engineering

    BGMEA University Of Fashion & Technology(BUFT)

    Thank You,
    Textile Engineers Society(TES)
    Team-BGMEA University Of Fashion & Technology(BUFT)

    RELATED ARTICLES

    LEAVE A REPLY

    Please enter your comment!
    Please enter your name here

    - Advertisment -

    Most Popular

    Recent Comments