Friday, April 19, 2024
More
    HomeFiberম্যান-মেড ফাইবার সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য: (পর্ব-০১)

    ম্যান-মেড ফাইবার সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য: (পর্ব-০১)

    আধুনিককালে প্রযুক্তি বিকাশের সাথে সাথে টেক্সটাইল ফাইবারের ও টেক্সটাইল সামগ্রীর প্রভূত উন্নতি হচ্ছে এবং ব্যবহারকারীদের কাছে টেক্সটাইল সামগ্রী সহজলভ্য হচ্ছে। সাধারনত সুতা তৈরিতে কাঁচামাল হিসেবে যে তন্তু বা আঁশ ব্যবহৃত হয়, সেগুলোকে টেক্সটাইল ফাইবার বলে। এরা মূলত দুই প্রকার। যথা:

    ১) প্রাকৃতিক ফাইবার
    ২) ম্যান-মেড ফাইবার।

    আজকের আলোচ্য বিষয় ম্যান-মেড ফাইবার।

    ♻ ম্যান-মেড ফাইবার: যেসকল ফাইবার সরাসরি প্রকৃতি থেকে প্রাপ্ত নয় অথবা সম্পূর্ণরুপে পরীক্ষাগারে নির্মিত তাদের ম্যান-মেড ফাইবার বা কৃত্রিম ফাইবার বলে ।

    ♻ প্রকারভেদ: সাধারণত ম্যান-মেড ফাইবার এর দুটি প্রকারভেদ রয়েছে:

    ১. রিজেনারেটেড ফাইবার
    ২. সিনথেটিক ফাইবার

    ♻ রিজেনারেটেড ফাইবার: যে সমস্ত কৃত্রিম ফাইবার তৈরিতে মুল উপাদান প্রকৃতি থেকে নেয়া হয় তাদের রিজেনারেটেড ফাইবার বলে। কয়েক ধরনের রিজেনারেটেড ফাইবার পাওয়া যায়, তাদের মধ্যে অন্যতম :

    ১. ভিসকোস রেয়ন।
    ২. এসিটেড রেয়ন।

    ♻ সিনথেটিক ফাইবার: যে সকল ফাইবার সম্পূর্ণরুপে রাসায়নিক প্রক্রিয়ার দ্বারাই তৈরি করা হয়, যাতে প্রাকৃতিক ফাইবারের কোন সম্পৃক্ততা থাকে না তাদের সিনথেটিক ফাইবার বলে ।

    ✅ কয়েক ধরনের সিনথেটিক ফাইবার রয়েছে :

    ১. অ্যাক্রাইলিক ফাইবার
    ২. অ্যারামাইড ফাইবার
    ৩. বাই-মাল্টিকম্পোনেন্ট ফাইবার
    ৪. পলিয়েস্টার
    ৫. পলিওলিফিন ফাইবার
    ৬. পলি অ্যামাইড ফাইবার
    ৭. নাইলন ফাইবার
    ৮. কার্বন ফাইবার
    ৯. গ্লাস ফাইবার

    ম্যান-মেড ফাইবার বা কৃত্রিম ফাইবার নিন্মোক্ত কিছু বৈশিষ্ট্য প্রদান করে থাকে :

    ১. মানবসৃষ্ট ফাইবার বলে এদের প্রাপ্তিস্থান সহজলভ্য।
    ২. এসকল ফাইবার প্রাকৃতিক ফাইবারের তুলনায় বেশ শক্তিশালী।
    ৩. এদের দিয়ে তৈরি কাপড় সহজে ধোয়া যায় এবং ময়লা সহজে দূর হয়।
    ৪. এই ধরনের ফাইবারকে বছরের যেকোনো সময়ে তৈরি করা যায়।
    ৫. কৃত্রিম ফাইবার গুলো যখন তাপের সংস্পর্শে আসে তখন সেগুলো খুব সংকুচিত হয়ে যায় এবং fiber গুলো ভেঙ্গে যায়। তাই এই ফাইবারের কাপড় পরে কেউ যদি আগুনের কাছে যায় তবে তার কাপড় খুব দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। এটা অনেক বেশি ঝুঁকিপূর্ণ।
    ৬. কৃত্রিম ফাইবারগুলো পানি শোষন করতে পারেনা।তাই মানুষের শরীরের ঘাম টেনে নিতে পারে না। আর এরা সহযে ভিজেও যায়না।
    ৭. এই ফাইবারের তৈরি কাপড় শরীরের জন্য সবসময় সহনীয় না।
    ৮. ফাইবার গুলো তৈরি করার পদ্ধতি আমাদের পরিবেশের জন্য অনেক ক্ষতিকর। কারন এটি তৈরি হবার সময় বিষাক্ত ধোয়া তৈরি হয় কারখানাগুলো থেকে।
    ৯. এসকল ফাইবারের স্থায়িত্ব অনেক বেশি। তাই অধিকতর ব্যবহারযোগ্য।
    ১০. এসকল ফাইবারের উৎপাদন খরচ অনেক কম এবং উচ্চ উৎপাদনশীলতা প্রদর্শন করে বিধায় বড় মাপের শিল্প উৎপাদনে ব্যবহৃত হয়।
    ১১. এসকল ফাইবারে কম অপদ্রব্য মিশ্রিত থাকে বলে ময়লা খুব কম হয়।

    কয়েকটি ম্যান-মেড ফাইবার বা কৃত্রিম ফাইবারের আবিষ্কার, উৎস এবং বর্ননা সম্পর্কিত তথ্যাবলী:

    ♻ রেয়ন: মানুষের সৃষ্ট সর্বপ্রথম কৃত্তিম ফাইবার।১৯১০ সালে অ্যামেরিকার ভিজকস কোম্পানির উদ্যোগে এটি তৈরি হয়।দু ধরণের ক্যামিকাল ও তৈরি পদ্ধতি ব্যাবহার করে রেয়ন তৈরি করা হয়।একটি ভিজকস রেয়ন আরেকটি কুপ্রামোনিয়াম রেয়ন।

    ♻অ্যাসিটেড: ১৯২৪ সালে অ্যামেরিকার Celanse নামক কোম্পানি অ্যাসিটেডের প্রথম বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু করে।

    ♻পলিওলেফিন: হারকেউলিস কর্পোরেশন এটির উৎপাদন শুরু করে।১৯৬৬ সালে বিশ্বের প্রথম কৃত্রিম ফাইবার হিসেবে এটি নোবেল পুরস্কার অর্জন করে।

    ♻ অ্যাক্রাইলিক: কৃত্রিম ফাইবার আবিষ্কার ও বাজারজাতকরণে যে নামটি বারবার আসে তা হল E.I Du Pont De Nemours & Company. অনেক গুলো কৃত্তিম ফাইবার আবিস্কারের কৃতিত্ব এ কোম্পানিটির। এক অর্থে কোম্পানিটি পৃথিবী তথা মানব সভ্যতার ইতিহাসকে পাল্টে দিয়েছে। অ্যাক্রাইলিক ১৯৫০ সালে আবিষ্কৃত হয়। এর পরে যে কয়টি ফাইবার নিয়ে আলোচনা করা হবে তার সবগুলোর সৃষ্টিকর্তা এই ডিও পন্ট কোম্পানি।

    ম্যানমেড ফাইবারগুলো বর্তমানে বহুলভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। আরো কিছু ফাইবার পরিচিতি এবং ম্যানমেড ফাইবারের বিস্তারিত তথ্য নিয়ে থাকবে দ্বিতীয় পর্বটি….

    🔖 তথ্যসূত্র: উইকিপিডিয়া, টেক্সটাইল ল্যাব ব্লগ, গুগল।

    Writter Information:

    Md Rashid
    Research Assistant
    Textile Engineers Society
    Dr. M A Wazed Miah Textile Engineering College

    RELATED ARTICLES

    1 COMMENT

    LEAVE A REPLY

    Please enter your comment!
    Please enter your name here

    - Advertisment -

    Most Popular

    Recent Comments