Tuesday, April 23, 2024
More
    HomeSilkরেশম কাপড় ও সম্প্রতি এক ঘটনা

    রেশম কাপড় ও সম্প্রতি এক ঘটনা

    রেশম সুতা কি ও কেমন করে হয় এই নিয়ে আমাদের সামান্য হলেও ধারণা আছে। আমরা কি জানি রেশম কাপড়ে সম্প্রতি স্বর্ণের কালিতে কোরআন মাজীদ লেখা হয়েছে! তো চলুন এই রেশম কাপড় সম্পর্কে কিছু আলোচনা করা যাক।

    রেশম সুতা, রেশম পোকা নামে একধরনের পোকার লার্ভার লালাগ্রন্থি থেকে নিঃসৃত রসের তৈরি। বিভিন্ন প্রজাতির রেশম পোকা বিভিন্ন মানের রেশম সুতা তৈরি করে। আমাদের দেশে সচরাচর মালবেরি রেশম সবচেয়ে মূল্যবান হিসেবে বিবেচিত, যা তৈরি হয় বম্বিকস বর্গের রেশম পোকার গুটি থেকে। রেশম পোকার গুটি চাষের পদ্ধতিকে সেরিকালচার বলা হয়। 

    রেশম চাষের তিনটি পর্যায় রয়েছে: তুঁত গাছ চাষ, রেশমপোকা পালন এবং কাপড় তৈরির জন্য রেশমগুটির সুতা পৃথক করা। প্রথম দুটি পর্যায় পুরোপুরি কৃষিভিত্তিক, তৃতীয় পর্যায় মূলত শিল্পগত ব্যাপার, যা নিষ্পন্ন হয় কুটির শিল্প প্রতিষ্ঠানে যা ফিলাচার নামে পরিচিত। রেশম উৎপাদন একটি জটিল প্রক্রিয়া। চীন দেশে সর্বপ্রথম রেশম সুতা আবিষ্কৃত হয়। রেশম বাংলাদেশের একটি অন্যতম অর্থকরী ফসল। বাংলাদেশের আবহাওয়া রেশম চাষের জন্য খুব উপযোগী। বাংলাদেশে বছরে চার থেকে পাঁচটি রেশম মৌসুম থাকে। প্রধান প্রধান মৌসুমগুলি হচ্ছে চৈত্র, জ্যৈষ্ঠ এবং অগ্রহায়ণ। রেশম চাষের সাথে আমাদের দেশের মানুষ অনেক কাল ধরেই পরিচিত। আবহাওয়া ও উর্বর মাটির জন্য চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় সবচেয়ে বেশি রেশম চাষ করা হয়। এছাড়া নাটোর, রাজশাহী, বগুড়া, পাবনা, ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, রংপুর, দিনাজপুর ও সিলেটে রেশম পোকার চাষ করা হয়। তুঁত গাছ বিভিন্ন জাতের হয়ে থাকে এবং নাম ভিন্ন ভিন্ন। বাংলাদেশের রেশম পোকারা যে তুঁত গাছের পাতা খায় তার নাম মোরাস অ্যালভা।

    রেশম থেকে প্রথমে হ্যান্ডলুম কিংবা পাওয়ার লুমে থান কাপড় প্রস্তুত করা হয়। রেশম থেকে প্রস্তুত পোশাকের মধ্যে শাড়ি, কামিজ, থ্রি পিস, লেহেঙ্গা, ওড়না, শার্ট, পাঞ্জাবি, ফতুয়া, স্কার্ফ, রুমাল, টাই, বেবি ওয়্যার ইত্যাদি অন্যতম। রেশমের ঐতিহ্যবাহী এবং অতি জনপ্রিয় শাড়ির নাম গরদ।

    রেশম কাপড় ও সম্প্রতি এক ঘটনা

    শুরুতে যেটি বলছিলাম, রেশম কাপড়ে স্বর্ণের কালিতে কোরআন মাজীদ লেখা হয়েছে। প্রায় তিন বছর ধরে রেশম কাপড়ে স্বর্ণ ও রুপার কালিতে কোরআন মাজীদ লিখে সবাইকে অবাক করে দেন আজারবাইজানের মুসলিম শিল্পী তুনজালে মেমেদজাদে। সিল্কের ওপর স্বর্ণের অক্ষরে কুরআন এই প্রথম লেখা হলো বলে জানান এই শিল্পী। ১১.৪ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১৩ ফুট প্রস্থের এই কুরআনের হরফ লেখা হয়েছে স্বর্ণ এবং রুপা দিয়ে। প্রত্যেকটি হরফ নিজের হাতে লিখেছেন মেমেদজাদে। তুরস্কের প্রেসিডেন্সি অব রিলিজিয়াস অ্যাফেয়ার্স দিয়ানেট থেকে স্বর্ণের হরফে লেখা কুরআনের এই প্রথম সংস্করণ প্রকাশিত হয়েছে।

    বর্তমানে রেশম সুতার ব্যাবহার ব্যাপক। প্রধান রেশম উৎপাদনকারী দেশ হলো চীন এবং ভারত। বাংলাদেশেও রেশমের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রয়েছে।এছাড়াও বর্তমানে পাকিস্তান, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়াসহ অন্যান্য দেশে রেশমের চাষ করা হচ্ছে। 

    বর্তমানে রেশম থেকে বিভিন্ন পোশাক প্রস্তুত করা হয়ে থাকে। উল্লেখ্য যে, মুসলিম পুরুষের জন্য রেশম অথবা সিল্কের কাপড় পরিধান করা জায়েজ না। তবে নারীদের জন্য জায়েজ।

    তথ্যসূত্রঃ বাংলাপিডিয়া, দ্য ইসলামিক ইনফরমেশন, আবু দাউদ: ৪০৫৭

    Writer information:
    Tawfiq Khan ArkoGreen
    University of Bangladesh
    Department Of Textile Engineering (1st Year / Batch 211)
    Gmail: [email protected]

    RELATED ARTICLES

    LEAVE A REPLY

    Please enter your comment!
    Please enter your name here

    - Advertisment -

    Most Popular

    Recent Comments