Thursday, March 28, 2024
More
    HomeFiberKevler Fiber

    Kevler Fiber

    সিন্থেটিক ফাইবার (Synthetic Fiber) হলো একধরনের ম্যান-মেড ফাইবার (Man-made Fiber) যা বিভিন্ন রাসায়নিক সংশ্লেষণের মাধ্যমে তৈরি করা হয়।আজকের আলোচনা একধরনের সিন্থেটিক ফাইবার নিয়ে যার নাম হচ্ছে কেভলার(Kevler)।

    কেভলার(Kevler) হলো একধরনের তাপ-প্রতিরোধী এবং শক্তিশালী সিন্থেটিক ফাইবার,যেমন নোমেক্স(Nomex) এবং টেকনোরা(Technora) এর মতো অন্যান্য অ্যারেমিড গুলোর সাথে সম্পর্কিত।১৯৬৫ সালে ডুপন্ট(DuPont) এ কর্মরত অবস্থায় Stephanie Kwolek এর হাত ধরে এই সিন্থেটিক ফাইবারটির বিকাশ হয়।এই উচ্চশক্তিসম্পন্ন ফাইবারটি ১৯৭০ এর দশকের প্রথম দিকে রেসিং টায়ারের স্টিলের বদলে প্রতিস্থাপন করে বানিজ্যিকভাবে ব্যবহার শুরু হয়।কেভলার ফাইবারটি সাধারণত দড়ি বা ফ্যাব্রিক শীটগুলোতে সংমিশ্রিত উপাদান গুলোর সাথে মিশ্রিত করে ব্যবহার করা হয়।ফাইবারটির উচ্চশক্তি ও ওজন অনুপাত বিবেচনা করে,এটি সাইকেলের টায়ার,রেসিং সেইলস(Racing Sails) এবং বুলেটপ্রুফ ভেস্ট তৈরি সহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহৃত হয়।এই ফাইবারটি ইস্পাতের চেয়ে ৫গুন বেশি শক্তিশালী।বর্তমানে আধুনিক মার্চিং ড্রামহেড (Marching Drumheads) তৈরি করতেও কেভলার ফাইবার ব্যবহার কর হয়। এই ফাইবারটি বোনা উপাদান (Woven Material) হিসেবেও ব্যবহৃত হয়।১৯৭০ এর দশকে Akzo এর হাত ধরে Twaron নামের প্রায় একই বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন একটি ফাইবারের রাসায়নিক কাঠামো বিকাশ লাভ করে।যার বানিজ্যিক উৎপাদন শুরু হয় ১৯৮৬ সালে এবং Teijin এর উৎপাদন করে যাচ্ছে।

    পলি-প্যারাফিনিলিন টেরেফথালামাইড-ব্র‍্যান্ডেড ক্যাভলার আবিষ্কার করেছিলেন পোলিশ-আমেরিকান রসায়নবিদ Stephanie Kwolek,যখন তিনি ডুপন্ট(DuPont) এ কর্মরত ছিলেন।১৯৬৪ সালে তার দলটি হালকা তবে শক্তিশালী টায়ারের জন্য হালকা ওজনের শক্তিশালী ফাইবার অনুসন্ধান শুরু করে।সেই সময়ে তিনি যেই পলিমার গুলো নিয়ে কাজ করছিলেন,পলি-পি-ফেনিলিন-টেরিফথলেট এবং পলিবেনজামাইড এগুলো দিয়ে তরল স্ফটিক তৈরি করেন সমাধান করার জন্য। তিনি পলিমার গুলোর মধ্যে ভিন্ন কিছু বৈশিষ্ট্য খুজে পান।সমাধানটি ছিলো “মেঘলা,আলোড়ন সৃষ্টিতে অস্বচ্ছ এবং সান্দ্রতা সম্পন্ন” এবং এরপর তা ফেলে দেয়া হয়।Kwolek তখন প্রযুক্তিবিদ Charles Smullen কে তার সমাধানটি পরীক্ষা করার জন্য বলেন,তারপর Charles Smullen গবেষণা শুরু করেন,তার সমাধানটির পরীক্ষা শুরু হয় এবং তিনি অবাক হয়ে যান যে ফাইবারটি ভেঙ্গে যায়নি।তার পরীক্ষাগার এবং তার তত্ত্বাবধায়ক আবিষ্কারের তাৎপর্য বুঝতে পারেন এবং তারই সাথে সাথে পলিমার রসায়নের নতুন একটা ক্ষেত্রের সুচনা হয়। ১৯৭১ এর মধ্যে আধুনিক কেভলার পরিচিতি লাভ করে। তবে Kwolek,কেভলার ফাইবার এর ব্যবহারের মাধ্যমে উৎপাদিত পণ্যসমূহের সাথে তেমন ভাবে জড়িত ছিলেন না।

    *যখন কেভলারকে কাটা হয়, ফলস্বরূপ যে ফাইবারটি পাওয়া যায় তার মধ্যে প্রায় ৩৬২০ MPa টেনসিল শক্তি এবং আপেক্ষিক ঘনত্ব ১.৪৪ বিদ্যমান থাকে।এবং পলিমারটি উচ্চশক্তিসম্পন্ন বহু আন্তঃশিকল বন্ধনে যুক্ত থাকে।NH Centers এবং কার্বনিল গ্রুপের মাধ্যমে এই আন্তঃঅনু হাইড্রোজেন বন্ধনগুলো গঠন করে।অতিরিক্ত শক্তিগুলো উৎপন্ন হয়ে থাকে সুগন্ধযুক্ত স্ট্যাকিং মিথস্ক্রিয়া থেকে। Van Der Waals Interactions এবং Chain Length যার দ্বারা অন্যান্য সিন্থেটিক পলিমারগুলো এবং Dyneema এর মতো ফাইবার গুলো প্রভাবিত হয় তার থেকেও কেভলারকে অনেক বেশি প্রভাবিত করে থাকে এই মিথস্ক্রিয়াগুলো। লবণের উপস্থিতি, অপরিষ্কার,ক্যালসিয়াম এর উপস্থিতি স্ট্যান্ডের মিথস্ক্রিয়াতে যুক্ত হয়ে উৎপাদনে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে সেক্ষেত্রে যত্নশীল হতে হয়।কেভলারের কাঠামোতে তুলনামূলক অনমনীয় অণু থাকে যা বেশিরভাগ প্ল্যানার শীটের মতো বা সিল্ক প্রোটিনের মতো কাঠামো তৈরি করে।

    *ক্রাইওজেনিক তাপমাত্রা (-১৯৬°C) এর নিচে কেভলার তার শক্তি এবং স্থিতিস্থাপকতা বজায় রাখে।আসলে এটি কম তাপমাত্রায় কিছুটা শক্তিশালী।উচ্চতাপমাত্রায় প্রসারণসাধ্য শক্তি ১০-২০% হ্রাসপ্রাপ্ত হয় এবং কয়েক ঘন্টা পরে শক্তি একইভাবে হ্রাস পেতে থাকে।উদাহরণস্বরূপ,যদি ৫০০ ঘন্টার জন্য ১৬০°C (৩২০°F) এ রাখা হয়,তাহলে শক্তি প্রায় ১০% হ্রাসপ্রাপ্ত হয়;এবং ৭০ ঘন্টা ধরে ২৬০°C(৫০০°F) থাকলে, শক্তি প্রায় ৫০% হ্রাস হয়ে যায়।

    কেভলার এর ব্যবহারঃ

    * কেভলার প্রায়শই কম তাপ পরিবাহিতা,সাসপেনশন,অন্যান্য উপাদানের তুলনায় উচ্চ শক্তির জন্য Cryogenics এর ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়।

    *Armor বা বর্ম তৈরিতেও ব্যবহার হয় কেভলার।যুদ্ধক্ষেত্রের হেলমেট,ব্যালিস্টিক ফেস মাস্ক এবং ব্যালিস্টিক ভেস্ট এর জন্য জন্য সুপরিচিত উপাদান হচ্ছে কেভলার।

    *কাটা,ঘর্ষন এবং উত্তাপ থেকে রক্ষা করার জন্য কেভলার ব্যবহার করা হচ্ছে গ্লাভস,হাতা,জ্যাকেট,চ্যাপস ইত্যাদি বিভিন্ন পোশাকে।

    *মোটরসাইকেল আরোহীদের ব্যবহার পোশাক ও অন্যান্য সুরক্ষা ব্যবস্থাতে ও ব্যবহৃত হচ্ছে কেভলার।

    *ধনুকের স্ট্রিংয়ের জন্য,সাইকেলের টায়ারে অভ্যন্তরীণ আস্তরণ হিসেবে,টেবিল টেনিসের টেবিলে বাউন্স বাড়ানোর জন্য,অনেক সময় টেনিস র‍্যাকেটে এবং নৌকার পালেও ব্যবহার করা হয় কেভলার।

    এছাড়াও জুতা,সুর সরঞ্জাম,ড্রামহেড,গাড়ি বডি তৈরিতে,গাড়ির ব্রেক,ফ্রাইংপ্যান,দড়ি,ক্যাবল,দালানকোঠা নির্মান,স্মার্টফোন,ওয়াইন্ড টারবাইন ইত্যাদিতেও ব্যবহৃত হচ্ছে কেভলার।হালকা বিমান নির্মানের ক্ষেত্রে কিছু নির্দিষ্ট অংশগুলোর বিকল্প হিসেবে ব্যবহার হয় কেভলার এর।পাখির সংঘর্ষে ভেঙ্গে যাওয়ার ক্ষেত্রে কেভলার,কাচঁ বা কার্বন ফাইবারের চেয়ে কম প্রবন।মূল কথা হচ্ছে,কোন বস্তুকে হালকা ও শক্তিশালী করে তুলতে কেভলার কার্যকারিতা অন্যান্য ফাইবারের সাথে অতুলনীয়।

    তথ্যসূত্রঃ উইকিপিডিয়া

    লেখক:

    মোহাম্মদ আরশিল আজীম
    Batch: 201
    Department of Textile Engineering
    BGMEA University of Fashion & Technology(BUFT)

    RELATED ARTICLES

    LEAVE A REPLY

    Please enter your comment!
    Please enter your name here

    - Advertisment -

    Most Popular

    Recent Comments