Saturday, April 20, 2024
More
    HomeLife Style & FashionSatin Fabric-একটি লাক্সারিয়াস ফেব্রিক

    Satin Fabric-একটি লাক্সারিয়াস ফেব্রিক

    আমরা যখন টেলিভিশনে বিভিন্ন অ্যাওয়ার্ড শো দেখি তখন দেখে থাকি বিভিন্ন দেশের নায়ক-নায়িকারা যে সকল পোশাক পরে আসেন সেগুলো খুব উজ্জ্বল এবং মসৃণ। আমরা হয়তো ভেবে থাকি এগুলো সিল্কের কাপর।কিন্তু এগুলো আসলে সিল্কের কাপড় নয় অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তারা যে কাপড় পরে থাকেন তা হয় সাটিন ফেব্রিক। এই কাপড় আগের দিনের অধিকাংশ রাজা-বাদশারা তাদের পোশাক তৈরিতে এই সাটিন ফেব্রিক ব্যবহার করতেন ।তাই মনে হয় এই কাপড় গুলোর সাথে এখনো রাজকীয় ভাব টা লেগে আছে। 

    ইতিহাসঃ‘সাটিন’ শব্দটি আসলে ‘জাইতুন’ থেকে এসেছে। প্রায় ২০০০ বছর আগে চীনে এই সাটিন কাপড় বোনা শুরু হয়। যে স্থানে এটি বোনা শুরু হয় সেটি ছিল চীনের একটি বন্দর নগরী।আরবি ভাষায় এর জায়গাটির নাম “কোয়ানজহোর”।সেই সময় সিল্কের ব্যাপক পরিমানে চাষ হতো ।তাই সিল্কের পোশাক কেবল উচ্চ শ্রেণীর মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না। আর তাই মহিলারা সাটিন কাপড় বুননের কাজে এবং এর মধ্যে বিভিন্ন ধরণের নকশা ফুটিয়ে তোলার জন্য রেশমের সুতা ব্যবহার করতেন। চীন এই সাটিন কাপড় খুব গোপনভাবে তৈরি করত যাতে বাইরের দেশের মানুষ এই সাটিন কাপড় সম্পর্কে জানতে না পারে।কিন্তু ধীরে ধীরে চীন এর ঘনিষ্ঠভাবে রক্ষিত সাটিন অবশেষে এশিয়া এবং আরও পশ্চিমে ছড়িয়ে পরে । দ্বাদশ শতাব্দীতে, ইতালি সাটিন উৎপাদনকারী  প্রথম পশ্চিমা দেশ হিসেবে পরিচিত হয় এবং চতুর্দশ শতাব্দীর মধ্যে ইউরোপের অধিকাংশ দেশ এই সাটিন ফেব্রিক এর গুরুত্ব উপলব্ধি করতে পারে এবং তারাও এই  সাটিন ফেব্রিক বোনা শুরু করে দেয়। সিল্কের ব্যবহারের ফলে এটির দাম খুবই বৃদ্ধি পায় এবং এটি একটি ব্যয়বহুল পণ্যে পরিণত হয়। তাই এটি তখন শুধু  গির্জা, কোনো অভিজাত ভবন বা রাজা বাদশা দের প্রাসাদে ব্যবহার করা হত। 


    সাটিন ফেব্রিক কিভাবে তৈরি করা হয়?সাটিন একটি ওভেন ফেব্রিক। টেক্সটাইল শিল্পে ব্যবহৃত তিনটি মৌলিক বুননের মধ্যে সাটিন একটি। বাকি ২টি হচ্ছে টুইল এবং প্লেইন। চীনে যখন সাটিন ফেব্রিক বোনা শুরু হয় তখন সাটিন ফেব্রিক বুনতে শুধু রেশমের সুতা ব্যবহার করা হত।কিন্তু বর্তমানে সাটিন ফেব্রিক বুনতে ফিলামেন্ট ফাইবার যেমনঃ পলিয়েস্টার, নাইলন ব্যবহার করা হয়। সাধারন ওভেন ফেব্রিক আর সাটিন ফেব্রিক এর মধ্যে পার্থক্য হল একটি  ওয়েফ্ট থ্রেড একটি ওয়ার্প থ্রেডের উপর দিয়ে গিয়ে পরের ওয়ার্প থ্রেডের নিচ দিয়ে যায় কিন্তু সাটিন ফেব্রিকের ক্ষেত্রে ওয়েফ্ট থ্রেডটি একের অধিক ওয়ার্প থ্রেডের উপর দিয়ে যায়। এই ওয়েফ্ট থ্রেডের  প্রসারিত অংশকে “Floats” বলা হয়। এর ফলেই ফেব্রিকটি বেশি মসৃণ এবং চিকন হয়ে থাকে।

    সাটিন ফেব্রিক কে কাপড়ের স্ট্রাকচার এবং কাপড়ের বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী ভাগ করা যায়।
    স্টাকচার অনুযায়ী সাটিন ফেব্রিক: 

    ১/ 4-harness satin weave: এই সাটিন ফেব্রিকে ওয়েফ্ট থ্রেডটি তিনটি ওয়ার্প থ্রেডের ওপর দিয়ে যায় এবং তারপরে একটি  ওয়ার্প থ্রেডের নীচে দিয়ে যায়। 

    ২/ 5-harness satin weave: এক্ষেত্রে ওয়েফ্ট থ্রেডটি চারটি ওয়ার্প থ্রেডের ওপর দিয়ে যায় এবং তারপরে একটি  ওয়ার্প থ্রেডের নীচে দিয়ে যায়।
    ৩/ 8-harness satin weave: এটি সাটিনের সবচেয়ে নমনীয় ফর্ম। ওয়েফ্ট থ্রেডটি সাতটি ওয়ার্প থ্রেডের ওপর দিয়ে যায় এবং তারপরে একটি  ওয়ার্প থ্রেডের নীচে দিয়ে যায়।
    বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী সাটিন ফেব্রিকঃ ১/ Antique satin  
    ২/Baronet or baronette satin
    ৩/ Charmeuse  satin
    ৪/ Double face satin
    ৫/ Duchess satin 
    ৬/ Faconne  satin
    ৭/ Farmer’s satin or Venetian cloth ৮/ Gattar satin
    ৯/ Messaline satin
    ১০/ Polysatin or poly-satin
    ১১/ Slipper satin 
    ১২/ Sultan satin
    ১৩/ Surf satin

    সাটিন ফেব্রিক বিভিন্ন ধরণের উপাদান তৈরিতে ব্যবহার করা হয় নিচে তা উল্লেখ করা হলোঃ
    • Evening gowns
    • Wedding dresses
    • Corsets
    • Skirts
    • Blouses
    • Shirts
    • Loungewear
    • Lingerie
    • Underwear
    • Inner lining
    • Neckties
    • Hats
    • Ballet shoes
    • Athletic shorts
    • Gloves
    • Neckbands
    • Sashes
    • Scarves
    • Brooches
    • Purses

    সাটিন ফেব্রিক এর বৈশিষ্ট্য:
    ১/ সাটিন ফেব্রিক খুব উজ্জ্বল অর্থাৎ কাপড়টি খুব চকচক করে।
    ২/ এই ফেব্রিক অত্যন্ত টেকসই।
    ৩/ এই কাপড় সহজে কুচকায় না।

    ৪/ সাটিন ফেব্রিক খুব নমনীয় হয়ে থাকে।
    ৫/ এই কাপড় হাইপোঅ্যালারজিক।
    ৬/ এর উপরের প্রান্ত খুবই মসৃণ কিন্তু ভিতরের প্রান্ত অমসৃণ।
    ৭/ এর উপর খুব সুন্দর ভাবে বিভিন্ন ডিজাইন ফুটিয়ে তোলা যায়, যা সাটিন ফেব্রিককে আরও আকর্ষণীয় করে তোলে। 
    সাটিন কাপড় এর কিছু অসুবিধাও রয়েছেঃ১/ কাপড় বোনার সময় সুতা গুলি  একটি অপরটির সাথে প্যাঁচ খেয়ে যায়।

    ২/ এই ফেব্রিকের ঝুলে পড়ার প্রবনতা রয়েছে।
    ৩/সেলাই করা খুব কঠিন।
    ৪/খুব বেশি যত্নের প্রয়োজন হয়।
    ৫/গরমের জন্য অনুপযুক্ত, কারণ এই মেটিরিয়াল এমনিতেই খুব ভারি হয়, আবার এটি বায়ু চলাচল করতে দেয় না

    সাটিন কাপড়  এর যত্নের পদ্ধতিঃ
    ১/ সাটিন কাপড় কে অবশ্যই ড্রাই ক্লিনিং করতে হবে।
    ২/কাপড় ধোঁয়ার সময় কাপড় চিপড়ানো যাবে না।
    ৩/খুব বেশি প্রয়োজন না হলে আয়রন করার দরকার নেই।
    ৪/ সাটিন ফেব্রিক এর উপর পানির ফোঁটা পরলে তা কাপড়ের উপর দাগ ফেলতে পারে। তাই আয়রন করার সময় অবশ্যই কাপড়ে পানি দেওা পরিহার করতে হবে।
    ৫/ এই কাপড় কে রোদে শুকানো যাবে না।
    ৬/ সাটিন ফেব্রিক ধোঁয়ার ক্ষেত্রে ডিটারজেন্ট ব্যবহার করা যাবে তবে ডিটারজেন্টকে অবশ্যই ক্যামিকেল মুক্ত হতে হবে।
    বহুকাল আগে থেকে সাটিন ফেব্রিক ব্যবহার শুরু হলেও আজও এই ফেব্রিক তার নামের পাশ থেকে লাক্সারিয়াস বা রাজকীয় পদবিটি হারায়নি। বলা যায় খুব দায়িত্বের সাথে এই পদবির মর্যাদা রক্ষা করে চলেছে এবং আশা করা যায় অদুর ভবিষ্যতেও এভাবেই মর্যাদা রক্ষা করে যাবে। 
    Source: www.wikipedia.comwww.masterclass.comwww.fabric.comwww.contrado.co.ukwww.utsavpedia.com
    Writer: Omar Saif
    Department of Textile Engineering(3rd Batch)
    Jashore University of Science and Technology

    RELATED ARTICLES

    LEAVE A REPLY

    Please enter your comment!
    Please enter your name here

    - Advertisment -

    Most Popular

    Recent Comments