Monday, April 29, 2024
More
    HomeFactory Reviewস্কয়ার গ্রুপ- The synonym of Quality

    স্কয়ার গ্রুপ- The synonym of Quality

    স্কয়ার, যার বাংলা আভিধানিক অর্থ দাঁড়ায় বর্গ। কিন্তু আজকে যে স্কয়ার নিয়ে কথা বলবো সেটা কোনো বর্গ নয় । বলছিলাম স্কয়ার গ্রুপের কথা,যারা বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ একটি বহুজাতিক কোম্পানি । চার বন্ধুর মিলিত প্রচেষ্টা এবং এক আকাশ ছোয়া স্বপ্নের প্রত্যাশায় স্যার স্যামসন এইচ চৌধুরীর নেতৃত্বে, ১৯৫৮ সালে একটি প্রাইভেট ফার্ম হিসেবে শুরু হয়েছিল স্কয়ারের যাত্রা । এর পরের কাহিনী তো সবার জানা, আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি স্কয়ারকে । শুরুতে চার বন্ধুর ২০ হাজার টাকা মূলধন দিয়ে শুরু হলেও বর্তমানে স্কয়ারের বার্ষিক লেনদেন ১১ হাজার ১৬০ কোটি টাকা। বর্গের চার বাহু যেমন সমান, ঠিক তেমনি স্কয়ারও প্রতিটি সেক্টরে সমান ভাবে তাদের সফলতা দেখিয়ে যাচ্ছে । বর্তমানে দেশের বৃহৎ বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর মধ্যে স্কয়ার অন্যতম । দেশের সর্ববৃহৎ ফার্মাসিটিক্যাল ইন্ডাস্ট্রির মালিকও তারাই । শুধুমাত্র দেশেই নয়, দেশের গন্ডি পেরিয়ে এখন বিদেশও রয়েছে তাদের ফ্যাক্টরি ।

    একটি বহুজাতিক কোম্পানি হওয়ায় স্কয়ারের রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ব্যবসায়িক খাত । তো চলুন একনজরে সেগুলো জেনে নেয়া যাক ।
    খাতগুলো হলোঃ
    ১.স্কয়ার ফার্মাসিটিক্যালস
    ২.স্কয়ার টয়লেট্রিজ লিমিটেড
    ৩. স্কয়ার টেক্সটাইলস লিমিটেড
    ৪.স্কয়ার স্পিনিংস লিমিটেড
    ৫.স্কয়ার ইনফরমেটিক্স লিমিটেড
    ৬.স্কয়ার হেলথ প্রোডাক্টস লিমিটেড
    ৭.স্কয়ার অ্যাগ্রো লিমিটেড
    ৮.স্কয়ার কনজ্যুমার লিমিটেড
    ৯.শেলটেক
    ১০.পায়োনিয়ার ইনস্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড
    ১১.মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক
    ১২.মিডিয়াকম লিমিটেড
    ১৩.ন্যাশনাল হাউজিং এ্যান্ড ফিন্যান্স লিমিটেড
    ১৪.এজিসেস সার্ভিসেস লিমিটেড
    ১৫.মাছরাঙা টেলিভিশন
    এসকল খাতসমূহে স্কয়ার তাদের ব্যবসা পরিচালনা করে থাকে ।

    আজকের এই লিখায় শুধুমাত্র স্কয়ারের টেক্সটাইল খাতগুলো সম্পর্কে আলোচনা করা হবে।

    “স্কয়ার টেক্সটাইলস লিমিটেড”: সর্বপ্রথম ১৯৯৪ সালে স্কয়ার টেক্সটাইল সেক্টরে পা রাখে । তিনটি ইউনিট নিয়ে তাদের এই সেক্টর গঠিত । প্রথম ইউনিট ১৯৯৪ সালে গঠিত হলেও দ্বিতীয় এবং তৃতীয় ইউনিট গঠিত হয় যথাক্রমে ১৯৯৮ এবং ২০০০ সালে । বাংলাদেশের ৪৩ টি টেক্সটাইল কোম্পানির মধ্যে অন্যতম স্কয়ার টেক্সটাইলস লিমিটেড । প্রতিষ্ঠা লগ্নের শুরু থেকেই তারা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে টেক্সটাইল সেক্টর এবং দেশের অর্থনীতিতে ।

    তারা মূলত ১০০% কটন রিং সুতা উৎপাদন করে থাকে । ইয়ার্ণ স্পিনিংয়ে তাদের রয়েছে ২২ বছরের অভিজ্ঞতা । দেশের অন্যতম বড় ইয়ার্ণ উৎপাদনকারীদদের মধ্যে তারা অন্যতম। তারা প্রতিদিন প্রায় ৯০,০০০ কেজি ইয়ার্ণ উৎপাদন করে থাকে । স্কয়ারের মূল লক্ষ্য হচ্ছে এক্সপোর্ট ওরিয়েন্টেড রেডিমেড গার্মেন্টস মার্কেট । আর এ লক্ষ্যেই তারা কাজ করে যাচ্ছে।
    টেক্সটাইল ইউনিটগুলোতে তাদের বিনিয়োগসমূহ নিম্নরুপঃ
    ইউনিট-১: ২০ মিলিয়ন ইউএস ডলার
    ইউনিট-২: ১৩.৫০ মিলিয়ন ইউএস ডলার
    ইউনিট-৩: ১২ মিলিয়ন ইউএস ডলার

    তাদের ইউনিট ভিত্তিক উৎপাদনসমূহ হলোঃ
    ইউনিট-১: ২০,০০০ কেজি (Per Day)
    ইউনিট-২: ৮,০০০ কেজি (Per Day)
    ইউনিট-৩: ২০,০০০ কেজি (Per Day)

    ২০১৮ সালে স্কয়ার বছরে তাদের ইয়ার্ণ উৎপাদন ক্ষমতা ৪৫০০ টনে উন্নীত করে । যার ফলে বছরে এখান থেকে তাদের আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে বছরে ১০০ কোটি টাকা ।
    স্কয়ার ডেনিম উৎপাদন করে থাকে তাদের উৎপাদিত ইয়ার্ণ থেকেই ।

    স্কয়ার ফ্যাশন লিমিটেড: “স্কয়ার ফ্যাশন লিমিটেড” বস্ত্রখাতে স্কয়ারের দ্বিতীয় প্রতিষ্ঠান যার পথ চলা শুরু হয় ২০০১ সালে । ২০০২ সাল থেকে তারা উৎপাদন শুরু করে । রেডিমেড নিট ওয়্যার হচ্ছে তাদের মূল প্রোডাক্ট এবং তারা ইউরোপ – আমেরিকার বাজারে তাদের পণ্যসমূহ রপ্তানি করে থাকে।

    তাদের দুইটি গার্মেন্টস ইউনিট এবং দুইটি ফ্রেবিকস ইউনিট রয়েছে । প্রতিটি ইউনিটে রয়েছে কাটিং, সুইয়িং, এমব্রয়ডারি, প্রিন্টিং এবং ফিনিশিং সেকশন। গার্মেন্টস ইউনিট ১ এবং ২ এর প্রোডাকশন ক্যাপাসিটি যথাক্রমে ৬০০০০ পিস/ডে এবং ৪৫০০০ পিস/ডে । ফেব্রিক ইউনিট ১ ও ২ এর উৎপাদন ক্ষমতা ৩৯.৫ টন ফেব্রিক প্রতিদিন ।

    তাদের পণ্যসমূহ হলোঃ টি-শার্ট, পোলো টি-শার্ট, ট্যাংঙ্ক টপস, স্পোর্টস ওয়্যার, আন্ডার গার্মেন্টস, পাজামা, ট্রাউজার্স, মেনস এ্যান্ড লেডিস ফ্যাশন ওয়্যার,কিডস ওয়্যার ইত্যাদি ।

    উৎপাদন ক্ষমতা(per day): স্কয়ার ফ্যাশন লিমিটেড প্রতিদিন ১৪০০ ডজন টি-শার্ট, ১২০০ ডজন পোলো টি-শার্ট, ১৪০০ ডজন ওমেনস এ্যান্ড কিডস ওয়্যার এবং ১০০০ ডজন আন্ডার গার্মেন্টস উৎপাদন করে থাকে ।

    স্কয়ার ফ্যাশন লিমিটেডের মোট ফ্যাক্টরী এরিয়া ২১০,০০০ স্কয়ার ফিট । এর মধ্যে তাদের প্রোডাকশন স্পেস এর পরিমাণ ১৭০,০০০ স্কয়ার ফিট । তাদের লোকবলের সংখ্যা বর্তমানে ৩২০০ । দেশের বস্ত্রখাতে এক অভূতপূর্ব প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিনিয়ত এগিয়ে যাচ্ছে স্কয়ার গ্রুপ এবং দেশের জন্য তৈরী করছে নতুন নতুন সম্ভাবনার দুয়ার।

    লেখক-মোহাম্মদ রাফি

    ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, পীরগঞ্জ, রংপুর ।

    ১ম ব্যাচ

    RELATED ARTICLES

    LEAVE A REPLY

    Please enter your comment!
    Please enter your name here

    - Advertisment -

    Most Popular

    Recent Comments