Friday, April 26, 2024
More
    HomeDyeingহরেক রকম প্রিন্টিং !!

    হরেক রকম প্রিন্টিং !!

    আমরা সবাই বিভিন্ন রঙের পোশাক (কাপড়) পছন্দ করে থাকি এবং যদি সেই কাপড়ের মধ্যে নির্দিষ্ট জায়গা জুড়ে কোন ছবি বা ডিজাইন থাকে তাহলে দেখতে আরো বেশি আকর্ষণীয় লাগে। তাই কাপড়কে আরও বেশি আকর্ষণীয় করার জন্য প্রিন্টিং এর মাধ্যমে নির্দিষ্ট জায়গায় হরেক রকমের ডিজাইন ফুটিয়ে তোলা হয়। তাহলে, চলুন জেনে নেওয়া যাক টেক্সটাইল প্রিন্টিং সম্পর্কে।

    টেক্সটাইল ওয়েট প্রসেসিং জগতে বিশাল জায়গা জুড়ে দখল করে আছে প্রিন্টিং। বস্ত্রশিল্পের জগতে বহু পদ্ধতিতে প্রিন্টিং করা হয়ে থাকে। অধিক ব্যবহৃত কয়েকটি প্রিন্টিং পদ্ধতির নাম হল:

    ১.হ্যান্ড ব্লক প্রিন্টিং:

    এটি খুব সহজ এবং প্রাচীন একটি প্রিন্টিং পদ্ধতি। এই পদ্ধতিটি আমরা বাসাবাড়ি অথবা ক্ষুদ্র কুটির শিল্প তে প্রিন্টিং এর কাজে বেশি ব্যবহার করে থাকি। এ পদ্ধতিতে আমরা মূলত একটি কাঠের চাকতি বা ব্লক ব্যবহার করে থাকি। হ্যান্ডব্লক এর জন্য ব্লকগুলি ২”-৪” ইঞ্চি পুরু ভাল কাঠের তৈরি হওয়া প্রয়োজন । তা না হলে অতি সহজেই ফেটে কিংবা বেকে যেতে পারে। ডিজাইনের আকারের উপর ব্লকের আকার নির্ভর করে। এ পদ্ধতিতে ব্লকের রং মিশিয়ে কাপড়ের উপর ছাপ দেওয়া হয়। এ ধরনের প্রিন্টিং এর একটি সুবিধা হলো একজন ব্যক্তি তার ইচ্ছামত কাপড়ের বিভিন্ন জায়গায় ডিজাইন ফুটিয়ে তুলতে পারে কিন্তু এটি ধীর গতির একটি পদ্ধতি। হ্যান্ড ব্লক প্রিন্টিং এর মাধ্যমে শাড়ি অথবা থ্রি পিস এর উপরে ডিজাইন ফুটিয়ে তোলা হয়।

    ২. স্টেনশীল প্রিন্টিং:

    এই পদ্ধতিতে প্রিন্টিং এর জন্য একটি বড় মেটাল শীট অথবা ওয়াটারপ্রুফ কাগজ ব্যবহার করা হয় এবং এতে কাঁচি দিয়ে কেটে বিভিন্ন ধরনের ডিজাইন করা হয়। তারপর সেই ডিজাইন এর উপরে রং করার ব্রাশ দিয়ে ঘষা হয় এবং এর ফলে ডিজাইনটি ফেব্রিক এর উপরে প্রিন্ট হয়ে যায়।

    ৩. স্ক্রীন প্রিন্টিং:

    স্টেনশীল প্রিন্টিং এর একটি উন্নততর পদ্ধতি হচ্ছে স্ক্রীন প্রিন্টিং। বর্তমানে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত প্রিন্টিং পদ্ধতি হলো স্ক্রিন প্রিন্টিং পদ্ধতি। স্ক্রীন প্রিন্টিং এর ক্ষেত্রে মূলত একটি পর্দা বা মেশ ব্যবহার করা হয়। মেশের নির্বাচিত অঞ্চল ছাড়া অবশিষ্টাংশ বিশেষ ধরনের স্টেনসিল বা ফটো ইমালশন দ্বারা মন্থর করা হয়। এরপর মেশ একটি কাঠের ফ্রেমে ভালো করে লাগানো হয়। এখন আমরা যে কাপড়ে প্রিন্ট করব সেই কাপড়ের উপর ম্যস টি স্থাপন করে রাবারের স্কুইজার দিয়ে ভালোভাবে টেনে প্রিন্টিং পেস্ট গুলোকে মেসির উপর ছড়িয়ে দিব। তাহলে হয়ে গেল আমাদের স্ক্রীন পৃন্টিং। স্ক্রিন প্রিন্টিং এর মাধ্যমে সাধারণত বড় পর্দা, বিছানার বেডশীট, টেবিল ক্লথ প্রিন্ট করা হয়।

    ৪. ডিজিটাল টেক্সটাইল (ইনক-জেট) প্রিন্টিং:

    আমরা বাসাবাড়ি অফিসে যে প্রিন্টার ব্যবহার করে থাকি ঠিক একই পদ্ধতিতে এটি কাজ করে। সহজ কথায় যখন একটি ডিজিটাল ইমেজ কে বাস্তবে ফিজিক্যালি রূপ দেয়া হয় তখন তাকে ডিজিটাল প্রিন্টিং বলা হয়ে থাকে এবং এই প্রিন্টিং এর জন্য সারফেস হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে আমাদের ফেব্রিক গুলোকে। ডিজিটাল টেক্সটাইল প্রিন্টিংয়ে একবার ডিজাইন তৈরি হয়ে গেলে তা সরাসরি কম্পিউটার থেকে ফ্যাব্রিকে মুদ্রণ করা যায়। এই প্রক্রিয়াটির জন্য অন্য কোনও পদক্ষেপের প্রয়োজন হয় না।

    ৫. হিট ট্রানস্ফার প্রিন্টিং:

    হিট ট্রানস্ফার প্রিন্টিং একটি বহুল ব্যবহৃত এবং সহজ প্রিন্টিং পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে ডিজাইনকৃত পেপার এর নিচে ফেব্রিক স্থাপন করে তার উপরে হিটেড রোলার অথবা ইস্ত্রি দিয়ে তাপ দেওয়া হয় এবং কাপড় প্রিন্ট হয়ে যায়। এই ধরনের প্রিন্টিং পদ্ধতি টি-শার্টের ক্ষেত্রে বেশি ব্যবহার করা হয়।

    ৬. রোলার প্রিন্টিং:

    টেক্সটাইল মিল কারখানায় বিভিন্ন রকমের রোলার প্রিন্টিং মেশিন ব্যবহৃত হয়ে থাকে।সাধারণত বড ় একটি গোলাকার সিলিণ্ডারের বা রোলার চার পার্শ্বে রং এর পাত্র, খোদায় করা রোলার , ডক্টর নাইফ ইত্যাদি সিস্টেমেটিক ভাবে সাজানো থাকে। রং এর পাত্র হতে খোদায় করা কপার রোলারের গায়ে রং লাগে যা পরবর্তীতে উচ্চ চাপে ফেব্রিকের উপরে রোলারের খোদায় করা ডিজাইন অনুযায়ী ফুটে উঠে। রোলার প্রিন্টিং এর মাধ্যমে দ্রুত গতিতে কাপড় প্রিন্ট করা যায়। রোলার প্রিন্টিং বিশেষত বড় ব্যাচগুলি মুদ্রণের জন্য উপযুক্ত।

    ৭. ডিসচার্জ প্রিন্টিং:

    নাম দেখেই বোঝা যাচ্ছে এটি কি ধরনের প্রিন্টিং। ডিসচার্জ মানে হল বরখাস্ত করা অথবা তুলে ফেলা। ডিসচার্জ প্রিন্টিং কে এক্সট্রাক্ট প্রিন্টিং ও বলা হয়। এটি একটি ভিন্নধর্মী প্রিন্টিং সিস্টেম।এই পদ্ধতিতে পুরো কাপড়টাই ডাই বা রঙ করে ফেলা হয়। পরে ডিসচার্জিং কেমিক্যাল ব্যবহার করে কাপড়ের নির্দিষ্ট জায়গা হতে ডিজাইন অনুযায়ী রঙ তুলে ফেলা হয়। ফলে রঙ তোলা জায়গাটায় একটা ডিজাইন তৈরি হয়ে যায়।

    ৮. বার্ন আউট প্রিন্টিং:

    কটন ফাইবার এবং আরো কিছু সেলুলোসিক ফাইবার শক্তিশালী মিনারেল এসিড দ্বারা ক্ষয়প্রাপ্ত হয়। আর এই ক্ষয়প্রাপ্ত হওয়ার প্রক্রিয়া টি ব্যবহার করে যে প্রিন্টিং সিস্টেম তৈরি হয়েছে সেটি হল বার্ন আউট প্রিন্টিং। এই প্রিন্টিং পদ্ধতির মাধ্যমে সাধারণত কটন এবং পলিয়েস্টার ফেব্রিকের ব্লেড ব্যবহার করা হয় এবং যখন এখানে বার্ন আউট প্রিন্টিং পেস্ট ব্যবহার করা হয় তখন কটন ফেব্রিক ক্ষয়প্রাপ্ত হয় এবং পলিয়েস্টার ফেব্রিক এর উপরে একটি ডিজাইন ফুটে।

    Writer Information:

    Name: Raied Ebne Hakim Rifat
    Institution: Primeasia University
    Batch:192
    Department: Textile Engineering

    RELATED ARTICLES

    LEAVE A REPLY

    Please enter your comment!
    Please enter your name here

    - Advertisment -

    Most Popular

    Recent Comments